লোকসভার সাপ্তাহিক শেষ অধিবেশনে শুক্রবার বাংলা এবং বাঙালি ইস্যুতে চরম উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা এই ইস্যুতে সুর চড়াতে গেলে স্পিকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে না দেওয়ার অভিযোগ তোলে। একপর্যায়ে তৃণমূল সাংসদরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
শতাব্দী রায়কে বাধা, শুরু উত্তেজনা:
সাম্প্রতিককালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাঙালি নাগরিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক ও পুশব্যাক করার অভিযোগ তুলে বারবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সেই ইস্যুটিই লোকসভায় তুলে ধরেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়।
শতাব্দী রায় অভিযোগ করেন, “এই বছর ওড়িশায় ৪৪৪ জন বাঙালিকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হয়েছে। কিন্তু এদের অধিকাংশই মুর্শিদাবাদ, মালদহ, বীরভূমের বাসিন্দা। এদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকেও বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে।”
কিন্তু তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করার আগেই স্পিকারের নির্দেশে জম্মু ও কাশ্মীরের বিজেপি সাংসদ যুগল কিশোর অন্য একটি প্রশ্ন পড়তে শুরু করে দেন। এতেই উত্তেজনা চরমে ওঠে।
ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ, স্পিকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ:
শতাব্দীকে কথা বলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে উপস্থিত তৃণমূল সাংসদরা তীব্র স্লোগান শুরু করেন। কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রও গলা চড়িয়ে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যাওয়ার আগেই কার্যত চাপের মুখে পড়ে স্পিকার শতাব্দীকে ফের কথা বলতে দেন।
বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ শতাব্দীর:
কথা বলার সুযোগ পেয়ে শতাব্দী রায় আরও চড়া সুরে বিজেপিকে আক্রমণ করেন। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “যদি বাংলা বলায় কাউকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়, তা হলে বিজেপি নেতা কর্মীদেরও হিন্দি-উর্দু বলার জন্য পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিন।”
সোনালী খাতুনের মতো সাম্প্রতিক নজিরকে সামনে রেখে তৃণমূলের দাবি— বাঙালি মানেই বাংলাদেশি নয়। সংসদে এই ইস্যুতে শাসক দলের বিক্ষোভ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁদের অবস্থানের কঠোরতা প্রমাণ করল।