বাংলার রাজনীতিতে ‘মিম’ ফ্যাক্টর! মালদা-মুর্শিদাবাদে সংগঠন জোরদার করছে ওয়াইসির দল, লোকসান কার?

বিহারে পাঁচটি আসন জয়ের পর এবার পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে হায়দরাবাদের দল অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM), যার প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাগুলিকে পাখির চোখ করে একাধিক আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিম। বিশেষত, মালদা ও মুর্শিদাবাদে তাদের তৎপরতা সবচেয়ে বেশি।

ইতিমধ্যেই মালদা জেলার কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর, মানিকচক, হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল ও রতুয়ায় মিমের পার্টি অফিস খোলা হয়েছে। দলের মালদা জেলা সভাপতি রেজাউল করিম দাবি করেছেন, ওয়াইসির নির্দেশে সারা রাজ্যজুড়ে কাজ চললেও মালদা-মুর্শিদাবাদে গতি বেশি। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সংগঠন গুছিয়ে ‘সর্বশক্তি নিয়ে’ ভোটে নামার ঘোষণা করেছে মিম।

মিমের অভিযোগ: মিম জেলা সভাপতি রেজাউল করিম তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’ দিয়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, “রাজ্যের ৪০ শতাংশ ভোটার মুসলমান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিথ্যা কথা বলে এই ভোটারদের ভোট নিয়েছেন… সংখ্যালঘুদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কিছু করা হয়নি।” তাঁর আরও দাবি, তৃণমূল এখন পুলিশকে দিয়ে তাদের সভা-মিছিল আটকাচ্ছে, যা প্রমাণ করে তৃণমূল ভয় পেয়েছে এবং সংখ্যালঘুদের ভোট এবার মিমের দিকেই যাবে।

অন্যান্য দলের প্রতিক্রিয়া:

  • কংগ্রেস: মালদা জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ ইশা খান চৌধুরী মিমের প্রভাবকে নস্যাৎ করে বলেন, “বিহার আর বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এক নয়। এখানকার মানুষ অনেক বেশি রাজনৈতিক সচেতন।” তিনি মনে করিয়ে দেন, মালদার মানুষ গনি খান চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং ধর্মের ভিত্তিতে ভোটাভুটি এখানে প্রভাব ফেলবে না।

  • তৃণমূল: তৃণমূলের মালদা জেলা সহসভাপতি শুভময় বসু মিমকে ‘বিজেপির প্রজেক্ট’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “একুশের নির্বাচনেও মিম মালদা-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে এসেছিল। এখানকার মুসলমানরাই তাদের তাড়া করে তাড়িয়েছে।”

  • বিজেপি: বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, বিজেপির একমাত্র লক্ষ্য রাজ্যের মসনদে বসা। তবে তিনি মিমের জেলা সভাপতির বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের মুসলমানদের এতদিন ভুল বুঝিয়েছে।”

জেলার রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, মিম যদি সংখ্যালঘু কেন্দ্রগুলিতে প্রার্থী দেয়, তবে বাম বা কংগ্রেসের ভোট ব্যাংকের চেয়ে তৃণমূলের ভোট ব্যাংকেই বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy