বাংলার জন্য মোদী সরকার কী দিয়েছে? রেল বাজেটে ৩ গুণ বৃদ্ধি থেকে ৫.৯৪ লক্ষ কোটি টাকা কর, নির্মলার হাতে মোক্ষম পরিসংখ্যান!

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন। কেন্দ্রীয় আবগারি (সংশোধন) বিল, ২০২৫ নিয়ে আলোচনার জবাবে মন্ত্রী সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন, কেন্দ্রের পূর্ণ সমর্থন সত্ত্বেও তৃণমূলই পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

অর্থমন্ত্রীর কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার কখনোই পশ্চিমবঙ্গকে উপেক্ষা করেনি। তিনি বলেন, “আসলে, তৃণমূল কংগ্রেসই পশ্চিমবঙ্গের জনগণের উন্নতির ক্ষতি করছে।” তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের প্রশ্নের জবাবে নির্মলা সীতারমন একাধিক চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান তুলে ধরেন:

  • আয়ুষ্মান ভারত থেকে প্রত্যাহার: অর্থমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, “২০১৯ সালের জানুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গ আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প থেকে সরে এসেছে। এটা কি বাংলার জনগণের জন্য ভালো?”

  • শিল্প পলায়ন: সীতারমন সংসদে জানান, ১ এপ্রিল, ২০১১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত রাজ্যে ৪৪৮টি তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং ৬,৪৪৭টি তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানি পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে চলে গেছে।

  • কেন্দ্রীয় কর বরাদ্দ: তিনি জানান, ২০১৪ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গকে কর বিচ্যুতি (Tax Devolution) হিসেবে ৫.৯৪ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, যা ২০০৪-১৪ সালে প্রদত্ত ১.৩৪ লক্ষ কোটি টাকার তুলনায় ৪.৪ গুণ বেশি।

  • MGNREGS তহবিল: অর্থমন্ত্রী তথ্য দেন, ইউপিএ সরকারের আমলে (২০০৬-০৭ থেকে ২০১৩-১৪) পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় ফান্ড পেয়েছিল ১৪,৯৮৫ কোটি টাকা। সেখানে এনডিএ সরকার (২০১৪-১৫ থেকে ২০২১-২২) দিয়েছে ৫৪,৪১৬ কোটি টাকা, যা ২৬১ শতাংশ বৃদ্ধি।

রেল ও পরিকাঠামোতে কেন্দ্রের নজিরবিহীন বরাদ্দ:

নির্মলা সীতারমন পশ্চিমবঙ্গের জন্য কেন্দ্রের পদক্ষেপের তথ্যও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় স্পনসরড স্কিম (CSS) এর অধীনে রাজ্যে ১১টি মেডিকেল কলেজ অনুমোদিত হয়েছে এবং কল্যাণী এইমস (AIIMS) চালু করা হয়েছে।

রেল বাজেটের প্রসঙ্গে তিনি জানান, এনডিএ সরকারের অধীনে পশ্চিমবঙ্গ ২০২৫-২৬ সালের জন্য রেকর্ড ১৩,৯৫৫ কোটি টাকার রেল বাজেট বরাদ্দ পেয়েছে, যা ২০০৯-১৪ সালের গড় ৪,৩৮০ কোটি টাকার তিনগুণেরও বেশি। রাজ্যে ৩,৮৪৭.৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০১টি অমৃত ভারত স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে এবং ১,৬৫০ কিলোমিটার রেলপথে বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে, যার ফলে রাজ্যে মোট বিদ্যুতায়ন ৯৮ শতাংশের বেশি হয়েছে। এছাড়াও, ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে পশ্চিমবঙ্গে ২,৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি ন্যাশনাল হাইওয়ে নির্মিত হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আরও নিশ্চিত করেন যে সেন্ট্রাল রোড অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড (CRIF) স্থানান্তরিত হচ্ছে না। ২০০২-০৩ অর্থবছর থেকে কেন্দ্র এই ফান্ডের অধীনে ১৩.২৫ লক্ষ কোটি টাকা ট্রান্সফার করেছে, যা একই সময়ে আদায় হওয়া ১২.৬২ লক্ষ কোটি টাকার রোড অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেসের চেয়ে বেশি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy