ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে ফের প্রাণ হারালেন বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিক। এবার ঘটনাস্থল ওড়িশার সম্বলপুর। অভিযোগ, স্রেফ বাংলায় কথা বলার অপরাধে এবং ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে মুর্শিদাবাদের ২১ বছর বয়সী যুবক জুয়েল শেখকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় জখম হয়েছেন জুয়েলের আরও দুই সঙ্গী। মর্মান্তিক এই ঘটনায় নতুন করে ভিনরাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল।
মৃত জুয়েল শেখ মুর্শিদাবাদের সুতি থানার চকবাহাদুরপুর এলাকার বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগেই কাজের সন্ধানে সম্বলপুরে গিয়েছিলেন তিনি। বুধবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ জুয়েল ও তাঁর দুই বন্ধু একটি চায়ের দোকানে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেখানে থাকা পাঁচ-ছয় জন স্থানীয় ব্যক্তি তাঁদের পরিচয় জানতে চায়। তাঁরা বাংলায় কথা বলায় তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। আক্রান্তরা নিজেদের ভারতীয় প্রমাণ করতে আধার কার্ড দেখালেও রেহাই মেলেনি। বেধড়ক মারধরের জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জুয়েলের। তাঁর দুই বন্ধু আরিক ও পলাশ কোনোমতে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।
একমাত্র ছেলের অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ জুয়েলের পরিবার। তাঁদের দাবি, স্রেফ বাঙালি হওয়ার কারণেই জুয়েলকে মরতে হলো। যদিও ওড়িশা পুলিশ এই সাম্প্রদায়িক বা জাতিগত বিদ্বেষের তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে। পুলিশের দাবি, বিড়ি চাওয়াকে কেন্দ্র করে বচসার জেরেই এই মারপিট ও মৃত্যু। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সম্বলপুর পুলিশ। তবে বাংলায় কথা বলার জন্য বাংলাদেশি সন্দেহে মারধর ও পুশব্যাকের আতঙ্কে এখন তটস্থ ভিনরাজ্যের বাঙালি শ্রমিকরা।