দিল্লি পুলিশের এক অফিসারের একটি মন্তব্যের জেরে ভাষা এবং জাতীয়তাবাদ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সম্প্রতি নয়াদিল্লির লোধি কলোনি থানার এক অফিসার পশ্চিমবঙ্গের বঙ্গভবনে পাঠানো একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশিদের ভাষা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের মতে, এটি ভারতের অন্যতম প্রধান একটি ভাষার প্রতি চূড়ান্ত অবমাননা এবং এর ভারতীয় সত্তাকে অস্বীকার করার শামিল।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলা কেবল পশ্চিমবঙ্গ বা ত্রিপুরার ভাষা নয়, এটি সংবিধান স্বীকৃত একটি ভাষা যা বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৫ কোটি মানুষের মাতৃভাষা। এই ভাষাকে কেবলমাত্র একটি দেশের সঙ্গে যুক্ত করে দেখা ভারতের বহুত্ববাদী আদর্শের পরিপন্থী।
বামপন্থী নেতা মহম্মদ সেলিম এই বিষয়ে সরকারের সাংস্কৃতিক নীতির সমালোচনা করেছেন। ফেসবুকে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ওই অফিসার কি নিরক্ষর, নাকি ওএমআর জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন?” সেলিম আরও অভিযোগ করেন, বিজেপি ও আরএসএস-এর নেতৃত্বাধীন সরকার দেশের বৈচিত্র্যকে অস্বীকার করে একটি একক সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে।
তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এই বিতর্কে ভিন্ন একটি দিক তুলে ধরেছেন। তিনি মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তার মন্তব্য, “কেবল বাংলা ভাষায় কথা বললেই সবাই ভারতীয় হয়ে যাবে, এমন ধারণা ভুল।” তিনি আরও বলেন, বহু অনুপ্রবেশকারী ভুয়া নথি নিয়ে রাজ্যে প্রবেশ করছে, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
এই ঘটনা কেবল একটি চিঠির মন্তব্য নয়, বরং এটি ভাষা, পরিচয় এবং জাতীয়তাবাদ নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিতর্কেরই একটি প্রতিফলন।