বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের বয়েজ হস্টেল থেকে মদ বিক্রির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, হস্টেলের একটি ঘর থেকে মদের বোতল থেকে প্লাস্টিকের জলের বোতলে ভরে পড়ুয়াদের মধ্যে মদ বিক্রি করা হয়েছে। এই অভিযোগ ঘিরে বর্তমানে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস।
কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, একদল পড়ুয়া ভিডিয়ো ক্লিপিংস দিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে। এরপরই তারা ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে এবং সেই রিপোর্ট স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওতে কী দেখা যাচ্ছে?
অভিযোগ উঠেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে কলেজে ‘স্পন্দন’ নামে একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন বয়েজ হস্টেল-১ এর রুম নং-৭ থেকে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করা হচ্ছিল।
যদিও ইটিভি ভারত ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি, তবে অভিযোগকারী পড়ুয়ারা বলছেন—
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে একটি ঘরের মধ্যে জলের বোতলে মদের বোতল থেকে মদ ঢালা হতে দেখা যাচ্ছে।
ঘরে আরও বেশ কিছু ছাত্র উপস্থিত।
টাকা পয়সা লেনদেনের জন্য QR code scan করা হচ্ছে এবং ফোন পে কিংবা গুগুল পে ব্যবহার করা হচ্ছে।
থার্মোকলের বাক্সে বরফে ডোবানো একাধিক মদের বোতলও রাখা আছে।
অভিযোগকারী পড়ুয়াদের ক্ষোভ
লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার পর একদল ছাত্র তাদের গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয় বলে অভিযোগকারী পড়ুয়ারা জানান।
হাউসস্টাফ শুভ্রনীল ঘোষ বলেন, “গত সেপ্টেম্বর মাসে যে স্পন্দন অনুষ্ঠান হয়, সেখানে বয়েজ হস্টেল-১ রুম নং-৭ থেকে অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে মদ বিক্রি করা হয়েছিল। সেটা নিয়ে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু আমরা যেহেতু অভিযোগ করেছি, তাই একদল ছাত্র আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি দেয়। প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভও দেখাই।”
হাউসস্টাফ প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, “কলেজে সুস্থ শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে হবে। অসাধু লোকেদের কলেজ থেকে বের করে দিতে হবে। এখানে ছেলেরা চিকিৎসক হওয়ার জন্য পড়াশোনা করতে এসেছে, কোন রেপিস্ট বা ক্রিমিনাল হওয়ার জন্য নয়।”
অধ্যক্ষের বক্তব্য ও স্বাস্থ্যভবনের হস্তক্ষেপ
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের বেশ কিছু ছাত্রদের ঘিরে বেশ কিছু অভিযোগ ছিল। সেটা আমরা আমাদের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটিকে দিয়েছি। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তবে অনেকে আবার দাবি করেছে, ভিডিয়ো এই কলেজের নয়। ফলে এটা আমরা স্বাস্থ্যভবনের হাতে ছেড়ে দিয়েছি। তারা বলবে, সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা বাড়লে ক্যাম্পাসে পুলিশকেও যেতে হয় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য।