হুগলি ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বন্যা কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে তিনি আরামবাগে পৌঁছে সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং এরপর কামারপুকুর হয়ে ঘাটালের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি এবং ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) কর্তৃক দফায় দফায় জল ছাড়ার কারণে হুগলির আরামবাগ, খানাকুল এবং পুরশুড়ার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গোঘাটের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন এবং হাজার হাজার বিঘা চাষের জমি জলের তলায় চলে গেছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখবেন।
মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে ডিভিসি-র জল ছাড়াকে রাজ্যের বন্যার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করে আসছেন। তাঁর মতে, এই বন্যা ‘ম্যান মেড’ বা মানবসৃষ্ট। সোমবার সমাজমাধ্যমেও তিনি একই অভিযোগ তুলেছেন। এর আগেও ২০০০ সালে বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন এবং বছর দুয়েক আগে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরেও মুখ্যমন্ত্রী এই একই কথা বলেছিলেন।
ডিভিসি এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে জল ছাড়া নিয়ে আবারও তরজা শুরু হয়েছে। রাজ্যের অভিযোগ, ডিভিসি সময় মতো অবহিত না করেই জল ছাড়ছে। যদিও ডিভিসি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে যে তারা সমস্ত পদ্ধতি মেনেই জল ছাড়ার বিষয়ে রাজ্যকে জানায়। তবে, ডিভিসি-র জলাধারগুলির ড্রেজিং না করার বিষয়ে রাজ্যের অভিযোগ নিয়ে ডিভিসি এখনো নীরব।
আজ বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় যাবেন এবং মেদিনীপুর শহরে রাত কাটাবেন। বুধবার দুপুরে তিনি ঝাড়গ্রামে যাবেন, যেখানে একটি ভাষা আন্দোলনের মিছিলে তাঁর যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের বিষয়ে নতুন কিছু ঘোষণা নিয়ে আসে কিনা, সেদিকেই এখন সবার নজর।