প্রতিবাদ করা একটি মৌলিক অধিকার, কিন্তু তা কোথায় এবং কীভাবে করা হবে, তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নবান্ন অভিযানের মতো কর্মসূচি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ায়, এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, “শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মৌলিক অধিকার, একে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা যায় না।” তবে একই সঙ্গে আদালত এই প্রতিবাদের উপর কিছু সীমাবদ্ধতাও আরোপ করেছে।
বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চে হাওড়ার এক ব্যবসায়ীর আবেদনের শুনানিতে আদালত জানায়, সরকার বা পুলিশের অনুমতি ছাড়া কোনো প্রতিবাদ কর্মসূচি করা যাবে না। প্রতিবাদ কর্মসূচির ফলে যেন সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত না হয় এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাইকোর্ট আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, হিংসা এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। সংবিধানের ৫১এ ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের এই বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত হাইকোর্টে জানান, গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী নবান্ন অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, যদিও আয়োজকরা এর দায় অস্বীকার করছেন। তিনি গত বছরের অভিযানের ভয়াবহতার কথা মনে করিয়ে দেন, যেখানে ৪৭ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছিলেন। এই সমস্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালত রাজ্য সরকারের দেওয়া তিনটি বিকল্প স্থান অনুমোদন করেছে, যেখানে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারবেন। এই স্থানগুলো হলো— মন্দিরতলা বাস স্ট্যান্ড, হাওড়া ময়দান এবং বঙ্কিম সেতুর নিচে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভবিষ্যতে আন্দোলনকারী দলগুলোকে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলতে হবে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করবে।