পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান (Chief of Defence Forces – CDF) জেনারেল আসিফ মুনির ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ চান, আর তাঁর ভাই ইমরান খান চান প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব—পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বোন আলেমা খান এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। স্কাই নিউজের ‘দ্য ওয়ার্ল্ড উইথ ইয়ালদা হাকিম’ অনুষ্ঠানে আলেমা মুনিরকে সরাসরি ‘উগ্রবাদী ইসলামিস্ট’ (Radicalised Islamist) এবং ‘ইসলামিক রক্ষণশীল’ (Islamic Conservatist) বলে অভিহিত করেছেন।
ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক যুদ্ধের (মে মাসে) কারণ জানতে চাওয়া হলে আলেমা খান পাক সেনা প্রধান মুনিরের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, “আসিফ মুনির একজন অত্যন্ত উগ্রবাদী ইসলামিস্ট এবং ইসলামিক রক্ষণশীল। এই কারণেই তিনি ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য উন্মুখ। তাঁর ইসলামিক উগ্রবাদ ও রক্ষণশীলতা তাঁকে এমন লোকদের বিরুদ্ধে লড়তে বাধ্য করে, যারা ইসলামে বিশ্বাসী নয়।”
নিজের ভাই ইমরান খানকে ‘বিশুদ্ধ উদারপন্থী’ (Pure Liberal) হিসেবে উল্লেখ করে আলেমা বলেন, “যখনই ইমরান খান ক্ষমতায় আসেন, আপনারা দেখেন যে তিনি সবসময় ভারতের সঙ্গে, এমনকি বিজেপির সঙ্গেও বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করেন। যখনই এই উগ্রবাদী ইসলামিস্ট, আসিফ মুনির, ক্ষমতায় থাকেন, আপনারা দেখবেন যে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ হবে এবং শুধু ভারত নয়, ভারতের মিত্ররাও ভুগবে।”
ইমরান খানকে দেশের জন্য ‘সম্পদ’ (Asset) আখ্যা দিয়ে আলেমা পশ্চিমী দেশগুলির কাছে তাঁকে জেল থেকে মুক্ত করার জন্য উদ্যোগ বাড়ানোর আবেদন জানান।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ প্রসঙ্গে
২২ এপ্রিলের পাহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ৭ মে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে (PoK) নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে সুনির্দিষ্ট হামলা চালায়। ওই হামলায় নেপালী নাগরিকসহ ২৬ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। ‘অপারেশন সিন্দূর’ নামে পরিচিত ওই হামলাগুলি পাক সামরিক অবকাঠামো বা সাধারণ নাগরিকদের স্থাপনা লক্ষ্য করে করা হয়নি বলে ভারত জানিয়েছিল।
আসিফ মুনির বনাম ইমরান খান
জানা যায়, ২০১৯ সালে মুনির ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। অভিযোগ, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরানের কাছে বিষয়টি সুখকর মনে হয়নি। এর ফলস্বরূপ, ইমরান খান পরে মুনিরকে ডিরেক্টর জেনারেল ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (ISI) পদ থেকে সরিয়ে দেন। তিন বছরের মেয়াদ থাকার কথা থাকলেও মাত্র আট মাসের মাথায় মুনিরকে ওই পদ ছাড়তে হয়, যদিও সেনাবাহিনী এই রদবদলের কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।