সভ্য সমাজের বুকে আবারও এক বর্বরোচিত ঘটনার সাক্ষী থাকল হাওড়ার জগাছা। হাটপুকুর এলাকায় শুক্রবার বিকেলে ৫টি সদ্যোজাত সারমেয় ছানাকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল। এই নারকীয় ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। শোকে পাথর স্থানীয় পশুপ্রেমীরা এখন একটাই দাবি তুলছেন— “দোষীদের এমন শাস্তি হোক যা উদাহরণ হয়ে থাকে।”
অভিশপ্ত সেই বিকেল: স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার একটি ক্লাব সংলগ্ন জায়গায় দিন কয়েক আগেই এক পথকুকুর বেশ কয়েকটি বাচ্চার জন্ম দিয়েছিল। ছানাগুলি পাড়ার সবার অত্যন্ত আদরের ছিল। কিন্তু শুক্রবার বিকেল ৪টে নাগাদ হঠাৎই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় সেই অবলা জীবগুলোর আশ্রয়ে। চোখের পলকে ৫টি ছানা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
পশুপ্রেমীদের আর্তনাদ ও বিক্ষোভ: ঘটনার খবর চাউর হতেই জগাছায় ভিড় জমান বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, এটি কোনও দুর্ঘটনা নয়, বরং ঠান্ডা মাথায় করা পরিকল্পিত পশু নিধন। এক পশু অধিকার কর্মীর কথায়, “ওদের কী অপরাধ ছিল? যারা এই কাজ করেছে তারা মানুষের নামের কলঙ্ক। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।”
তদন্তে নেমেছে পুলিশ: খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জগাছা থানার পুলিশ। অগ্নিদগ্ধ ছানাগুলির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা:
ইচ্ছাকৃতভাবেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পথকুকুর তাড়ানোর কোনও গভীর ষড়যন্ত্র এর নেপথ্যে থাকতে পারে।
অপরাধীদের চিহ্নিত করতে এলাকার সমস্ত সিসিটিভি (CCTV) ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড়: এই নৃশংস ঘটনার ছবি এবং খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তাল হয়ে উঠেছে নেটপাড়া। নেটিজেনদের দাবি, পশুপাখিদের ওপর এমন পাশবিক অত্যাচার রুখতে কঠোর আইন প্রয়োগের সময় এসেছে। জগাছা থানার পুলিশ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে এবং কাউকেই রেয়াত করা হবে না।
হাওড়ার হাটপুকুর আজ স্তব্ধ, কিন্তু সেই নিস্তব্ধতার আড়ালে জমাট বাঁধছে তীব্র ক্ষোভ। অবলা ছানাগুলোর খুনিরা কি ধরা পড়বে? এখন সেটাই দেখার।