নির্বাচন কমিশনে ফের চিঠি মমতার, ‘কেন্দ্রীভূত কর্মী নিয়োগ ও বেসরকারি আবাসনে ভোটকেন্দ্র কেন?’, কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন!

রাজ্য এবং কেন্দ্রের মধ্যে চলতে থাকা নির্বাচন-সম্পর্কিত টানাপোড়েন আরও তীব্র হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রধান জ্ঞানেশ কুমারকে দু’পাতার একটি বিস্তৃত চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি দুইটি ‘উদ্বেগজনক ও জরুরি’ বিষয়ে কমিশনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

১. ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগে আপত্তি

 

চিঠির প্রথম অংশে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO)-এর জারি করা একটি আরএফপি (Request for Proposal) নিয়ে তীব্র আপত্তি জানান। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, CEO-এর দফতর জেলার নির্বাচনী আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে, SIR বা অন্য কোনও নির্বাচনী তথ্য ইনপুটের কাজে আর বাংলার সহায়তা কেন্দ্রের (BSK) কর্মীদের ব্যবহার করা যাবে না

এর বদলে CEO-এর দফতর নিজেই এক হাজার ডেটা এন্ট্রি অপারেটর এবং ৫০ জন সফটওয়্যার ডেভেলপার নিয়োগের জন্য আরএফপি প্রকাশ করেছে।

  • মমতার প্রশ্ন: মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্তকে প্রশাসনিক রীতিনীতির পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “জেলা দফতরগুলিতে ইতিমধ্যেই পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মী থাকতে, এক বছরের জন্য বাইরের কোনও সংস্থাকে নিয়োগের প্রয়োজন কী?

  • উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন: তিনি জানতে চেয়েছেন, “এই হঠাৎ কেন্দ্রীভূত নিয়োগ প্রক্রিয়ার নেপথ্যে কী উদ্দেশ্য?” তাঁর প্রশ্ন, এই পদক্ষেপ কোনও রাজনৈতিক দলের স্বার্থে নেওয়া হচ্ছে কি না। তিনি আরএফপি-র সময় ও রীতিকে ‘গুরুতর সন্দেহজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২. বেসরকারি আবাসন কমপ্লেক্সে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের চেষ্টা

 

চিঠির দ্বিতীয় অংশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের একটি প্রস্তাব নিয়ে তীব্র আপত্তি জানান। তিনি অভিযোগ করেন, কমিশন বেসরকারি আবাসন কমপ্লেক্সে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা বিবেচনা করছে এবং জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের এ বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে।

  • বিপত্তি: মুখ্যমন্ত্রী এই প্রস্তাবকে ভোটের নিরপেক্ষতা, সমতা ও সহজপ্রাপ্যতা—সবকিছুকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায় বলে উল্লেখ করেছেন।

  • বৈষম্যের আশঙ্কা: তিনি বলেন, সরকারি বা আধা-সরকারি ভবনে ভোটকেন্দ্র রাখার প্রচলিত নিয়ম ভেঙে বেসরকারি কমপ্লেক্সে ভোটকেন্দ্র করা হলে, তা সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। সাধারণ মানুষের তুলনায় সুবিধাভোগী আবাসনের বাসিন্দারা বিশেষ সুবিধা পাবেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিতে বারবার প্রশ্ন তোলেন, “কেন? কেন? কেন?” এবং এই সিদ্ধান্ত কোনও রাজনৈতিক দলের চাপে নেওয়া হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও উত্থাপন করেন। তিনি কমিশনের মর্যাদা, নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য দ্রুত হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেছেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy