মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার নবনির্মিত ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে হৃদয়বিদারক ঘটনা। দেরিতে অ্যাম্বুলেন্স আসার কারণে নবজাতক সন্তানকে জন্ম দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ২৫ বছর বয়সী এক তরুণী মা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
মৃত গৃহবধূর নাম জামিলা খাতুন (২৫), তাঁর বাড়ি ফরাক্কার ইমামনগর গ্রামে।
অ্যাম্বুলেন্সের অপেক্ষায় দেড় ঘণ্টা:
পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে প্রসব যন্ত্রণায় কাতর জামিলাকে ফরাক্কা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তিনি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা দ্রুত তাঁকে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রেফার করেন।
এরপর শুরু হয় অ্যাম্বুলেন্সের জন্য মরিয়া চেষ্টা। পরিবার একবার নয়, বারবার ১০২ নম্বর সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসে ফোন করে। কিন্তু অভিযোগ, বারবার ফোন করার পরেও দেড় ঘণ্টা কেটে যায়, দেখা মেলেনি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের।
অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার পর নিজেদের উদ্যোগেই অর্জুনপুর হাসপাতাল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসে ওই গৃহবধূকে জঙ্গিপুর নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। অসহায় পরিবারের চোখের সামনেই মৃত্যু হয় জামিলা খাতুনের। নবজাতককে কোলে নিয়েই ভেঙে পড়েন স্বজনরা।
বিক্ষোভ ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ:
আজ দুপুরে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে মুহূর্তে শুরু হয় বিক্ষোভ। স্থানীয়দের অভিযোগ, “সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস যদি সময়মতো না আসে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে। এটা সরাসরি প্রশাসনিক ব্যর্থতা।”
ফরাক্কা ব্লক হাসপাতালের এক চিকিৎসক অ্যাম্বুলেন্স না আসার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফরাক্কা থানার পুলিশ।
জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মাকে হারাল এক নবজাতক। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষের অভিযোগ, শুধু ফরাক্কা ব্লক নয়, সর্বত্রই ১০২ নম্বর অ্যাম্বুলেন্সের গাফিলতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। জঙ্গিপুর মহকুমা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। প্রশ্ন উঠছে, একটি ফোনকলের জবাব সময়মতো পেলে কি এই তরুণী মাকে বাঁচানো যেত না