বিজয়া দশমীর সন্ধ্যায় দুর্গাপ্রতিমা ভাসান দিতে গিয়ে মধ্যপ্রদেশে এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা ঘটেছে। খান্ডোয়া জেলার পান্ধানা শহরে একটি পুকুরে ট্রাক্টর-ট্রলি উল্টে অন্তত ১১ জন কিশোর-যুবকের জলে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে আটজন নাবালক-নাবালিকা রয়েছে, যা এই ঘটনাকে আরও বেশি বেদনাদায়ক করে তুলেছে।
কীভাবে ঘটল এত বড় দুর্ঘটনা?
বৃহস্পতিবার রাতে পান্ধানা এলাকার অরডালা গ্রামে পাডলাফাটা এলাকার বাসিন্দারা শোভাযাত্রা সহকারে একটি ট্রাক্টর-ট্রলিতে করে প্রতিমা নিয়ে স্থানীয় পুকুরের ধারে যান। পুকুরের মধ্যে নেমে পড়ার পরই বিপত্তি ঘটে। জলাশয়ের ভেতরের নরম কাদা মাটিতে ট্রাক্টরটি ভারসাম্য রাখতে না পেরে উল্টে যায় এবং ট্রলি সমেত প্রায় ২০-২৫ জন গভীর জলে পড়ে যান।
খান্ডোয়ার পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, মৃতদের মধ্যে সাতটি কিশোরী এবং চারজন যুবক রয়েছেন। তাদের বয়স ১৮, ১৩, ১৬, ১৫, ২০-এর মধ্যে। এই দুর্ঘটনায় আরও তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যার মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশের সতর্কবার্তা উপেক্ষা
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এই দুর্ঘটনাটি আগেই এড়ানো সম্ভব ছিল। স্থানীয় পুলিশ ড্রাইভারকে আগাম সতর্ক করে দিয়েছিল যে, জলের ভিতর নরম কাদামাটির মধ্যে ট্রাক্টর নিয়ে যাওয়া উচিত হবে না। কিন্তু বিজয়ার আনন্দের মুহূর্তে বাসিন্দারা সেই সাবধানবাণী কানে তোলেননি। অনুমান করা হচ্ছে, জলের নীচে কোনো পাথরে চাকা পড়ে ট্রলিটি উল্টে যায়।
ট্রলিতে থাকা অনেকেই সাঁতরে উপরে উঠে আসতে সক্ষম হলেও, ১১ জনকে সময়মতো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ক্ষতিপূরণ ঘোষণা ও শোকবার্তা
এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব।
মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব নিহতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে এককালীন ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা এককালীন সাহায্য ঘোষণা করেছেন।
অসময়ের এই শোকাবহ ঘটনায় গোটা খান্ডোয়া জেলায় নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া।