দুর্গাপুরের ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে যখন রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে, ঠিক তখনই বিতর্ক উসকে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর মন্তব্য, “মেয়েরা একা একা বেরোবে কেন ১২টার পরে? মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, ঠিকই বলেছেন। হঠাৎ বেরনোর কারণ কী?”
সৌগত রায়ের বিতর্কিত মন্তব্য:
গণধর্ষণের ঘটনার প্রেক্ষিতে সৌগত রায় বলেন, “কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে মেয়েদের বেরনোর ব্যাপারে অবশ্যই বিধি-নিষেধ থাকা উচিত। কেউ ডাক্তারি পড়ছে, সে রাত ১২টার সময় তার ক্যাম্পাস থেকে বেরোবে, সেটা কাম্য নয়।”
তিনি এই পরিস্থিতিকে দেশের সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “আমাদের দেশে এখনও মেয়েরা সব জায়গায় খোলাখুলি গভীর রাতে বেরোতে পারবে এমন পরিবেশ হয়নি। একটা ফাঁকা মাঠের মধ্যে মেয়েরা যদি রাত ১২টায় বেরোয়, সেটা বিপজ্জনক। তার কারণ, সমাজে খারাপ লোক সবসময় থাকে। পুলিশ কি প্রত্যেক স্কোয়ার-ইঞ্চিতে পাহারা দেবে? তা তো নয়।”
সৌগত রায়ের মতে, কাজ ছাড়া গভীর রাতে মেয়েদের বেরোনো কাম্য নয়। তিনি শুধু আইটি ইন্ডাস্ট্রির উদাহরণ দিয়ে বলেন, “রাতে কাজ একমাত্র আইটি ইন্ডাস্ট্রির মেয়েরা বহু রাতে করেন। আর কোথাও হয় না।”
মেয়ের সরকারি সুরক্ষা নেই, ওড়িশা নিয়ে যেতে চান বাবা:
অন্যদিকে, এই সার্বিক পরিস্থিতি দেখে রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়ে চূড়ান্ত অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার বাবা। তিনি তাঁর মেয়েকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওড়িশায় নিয়ে চলে যেতে চান। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেছেন, “এখানে সুরক্ষিত নয়। আমার মেয়েকে বাড়ি নিয়ে চলে যাব, ওড়িশার জলেশ্বরে। এখানে সরকারি সুরক্ষা নেই। এখানে তো ঔরঙ্গজেব শাসন চলছে।”
নির্যাতিতার বাবা আরও বলেন, “এখন অনুভব করতে পারলাম, পশ্চিমবঙ্গ আর ওড়িশার মধ্যে পার্থক্য কী। আমার ওড়িশা খুব ভালো। আমার মুখ্যমন্ত্রী (ওড়িশার) আশ্বাস দিয়েছেন, আপনি আসুন। দরকার পড়লে এখানে মেডিক্যাল কলেজে মেয়েকে ভর্তি করে দেব… সবকিছু সহায়তা… ডিজি, ডিএসপি, এসপি… এমএলএ, এমপি সবাই সবসময় আমার সঙ্গে খবর নিচ্ছেন, সমবেদনা জানিয়েছেন। ওড়িশা সবকিছু সাহায্য করছে আমাকে।”
সাংসদ সৌগত রায়ের এই মন্তব্য এবং নির্যাতিতার বাবার রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়ে এমন গুরুতর অভিযোগের পর দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ড নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিল।