কেরলে ‘ব্রেন-ইটিং অ্যামিবা’ নামে পরিচিত অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিস সংক্রমণের ঘটনায় নজিরবিহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার শুক্রবার সংসদে এই সংক্রান্ত ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ করেছে। লোকসভায় এক লিখিত উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রতাপরাও যাদব জানান, ২০২৫ সালেই কেরলে ১৭০ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, “২০২৩ সাল থেকে রাজ্যটিতে মোট ২১১টি সংক্রমণ এবং ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।” তিনি আরও জানান যে, ২০২৩ সালে এই রোগে ২টি সংক্রমণ এবং ২টি মৃত্যু হলেও, তা ২০২৪ সালে বেড়ে হয় ৩৯টি সংক্রমণ ও ৯টি মৃত্যু। আর ২০২৫ সালে এই সংখ্যা এক লাফে পৌঁছে যায় ১৭০ সংক্রমণ ও ৪২ মৃত্যুতে, যা গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
কেন্দ্রের উচ্চ পর্যায়ের জরুরি তৎপরতা
প্রতাপরাও যাদব জানান, এই সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (NCDC), কোঝিকোড় দ্বারা গত বছরের জুলাইয়ে একটি তদন্ত করা হয়।
অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিসের সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগের সচিব/ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR)-এর ডিরেক্টর জেনারেল জাতীয় এবং রাজ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। মন্ত্রী জানান, ১৮টি ভাইরাস রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরিজ (VRDLs)-এর মাধ্যমে জাতীয় অ্যাকিউট এনসেফালাইটিস সিনড্রোম (AES) নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়াও, NCDC অক্টোবর ২০২৪-এ প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিস নিয়ে একটি সংশোধিত কমিউনিকেবল ডিজিজ (CD) সতর্কতা জারি করেছে, যেখানে রোগের ব্যবস্থাপনা, প্রতিরোধমূলক এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাগুলি বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
সংক্রমণের কারণ ও ধরন
অ্যামিবিক এনসেফালাইটিস কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের একটি মারাত্মক এবং দ্রুত প্রাণঘাতী রোগ, যা মূলত Naegleria fowleri নামক জীবাণুর সংক্রমণে ঘটে। এই রোগটি সাধারণত উষ্ণ মিষ্টি জলের জলাশয় (যেমন হ্রদ বা নদী) যেখানে এই অ্যামিবা থাকে, সেখানে সাঁতার বা স্নান করার সময় ছড়ায়।