দারিদ্র্যের কষাঘাত উপেক্ষা করে BARC-এর বিজ্ঞানী, অজয়ের সাফল্য গর্বিত সকলে

মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের এক দরিদ্র কুমোরের ছেলে অজয় কুমার চক্রবর্তী বার্ক (BARC)-এর বিজ্ঞানী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। যে হাতগুলো একসময় মাটি দিয়ে হাঁড়ি তৈরি করত, সেই হাতগুলোই এখন দেশের জন্য গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হবে। অজয়ের এই সাফল্যে তার পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে।

২৩ বছর বয়সী অজয় জানান, তার বাবা বিহারী লাল চক্রবর্তী বছরের পর বছর ধরে রাস্তার ধারে মাটির হাঁড়ি বিক্রি করে সংসার চালিয়েছেন। মাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাঁড়ি বিক্রি করতেন। এমন দারিদ্র্যের মধ্যে থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন অজয়। তিনি বলেন, “সবকিছু সহজ ছিল না, কিন্তু পড়াশোনার সময় বাবা-মায়ের সংগ্রাম সবসময় আমার মনে থাকত।” সেই কঠোর পরিশ্রমই আজ সফল হয়েছে, এবং পরিবারের চোখে আনন্দের অশ্রু।

অজয় তার শিক্ষাজীবনেও মেধার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি সরস্বতী বিদ্যা মন্দির থেকে দশম শ্রেণীতে মধ্যপ্রদেশে নবম স্থান অধিকার করেন। এরপর বিজ্ঞান কলেজ থেকে রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি আইআইটির স্নাতকোত্তর প্রবেশিকা পরীক্ষায় দেশে ১৯তম স্থান অর্জন করেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক যোগ্যতা পরীক্ষায় (GATE) তিনি দশম স্থান অর্জন করেন এবং ইন্টারভিউতে সফল হন।

অজয়ের বাবা বিহারী লাল চক্রবর্তী বলেন, “আমার স্ত্রী কখনও স্কুলে যাননি এবং আমি মাত্র একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। আমার একটাই স্বপ্ন ছিল, আমার ছেলে যেন রাস্তার ধারে হাঁড়ি বিক্রি না করে, সে যেন একজন অফিসার হয়।” তিনি এবং তার স্ত্রী দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেছেন সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য। আজ তাদের সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে।

অজয় জানান, পড়াশোনার সময় তিনি অনেক কষ্ট করেছেন। অনেক সময় বাবা-মা বাড়িতে না থাকলে তাকে দোকানের দায়িত্ব নিতে হতো। গ্রাহক না থাকলে সেখানেই বসে পড়াশোনা করতেন। তিনি বলেন, তার সাফল্যের পেছনে বাবা-মা, বন্ধুবান্ধব এবং শিক্ষকদের অবদান রয়েছে, তবে সবথেকে বেশি ছিল তার নিজের কঠোর পরিশ্রম, যার ফল আজ তিনি পেয়েছেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy