দত্তাবাদ স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুন, আদালতকে জাল নথি দেওয়ার সন্দেহ, অভিযুক্ত বিডিওর খোঁজে পুলিশ

দত্তাবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন ক্যামিলা খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসা রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মনের আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা। বিডিও যে অজুহাত দেখিয়েছিলেন, তা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে দাবি পুলিশের। এবার পুলিশের হাতে এসেছে কলকাতা বিমানবন্দর লাগোয়া একটি হোটেলের মালিকের বয়ান, যা মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

খুনের দিন তিনি দত্তাবাদে ছিলেন না—এই দাবি করে প্রশান্ত বর্মন আগাম জামিন চেয়ে আদালতে বলেছিলেন, ঘটনার দিন তিনি বিমানবন্দর লাগোয়া ওই হোটেলে অবস্থান করছিলেন। এই দাবির সপক্ষে তিনি হোটেল সংক্রান্ত কিছু নথিও আদালতে জমা দেন। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, এই নথিগুলোই এখন কৌতূহলের কেন্দ্রে।

পুলিশ সূত্রে খবর, আদালতে জমা দেওয়া নথি অনুসন্ধান করতে গিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন গোয়েন্দারা। হোটেলের রেজিস্টার ও ডিজিটাল এন্ট্রি খতিয়ে দেখে তারা জানতে পারেন, ঘটনার দিন প্রশান্ত বর্মনের নামে কোনো ঘর বুকিং বা থাকার কোনো রেকর্ডই খাতায়-কলমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। হোটেলের মালিকের বয়ানও বিডিও-র দাবিকে সমর্থন করেনি।

এতে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে আদালতে জমা দেওয়া নথিগুলি কোথা থেকে এল? তদন্তকারীদের সন্দেহ, বিডিও-র জমা দেওয়া নথি জাল হতে পারে। বিধাননগর কমিশনারেটের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, “এ ধরনের গুরুতর অভিযোগে নিজের অবস্থান লুকোতে এবং আদালতকে বিভ্রান্ত করতে জাল নথি ব্যবহার করা ভয়ংকর একটি অভিযোগ। আমরা প্রতিটি নথির উৎস যাচাই করছি।” যদি নথি জালিয়াতি প্রমাণিত হয়, তবে খুনের মামলার পাশাপাশি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আলাদা করে জালিয়াতির মামলাও হতে পারে।

গোয়েন্দাদের মতে, প্রশান্ত বর্মন কেবল অজুহাত দিয়েই নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি, বরং আদালতে বিভ্রান্তিকর তথ্য পেশ করে তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তদন্তের স্বার্থে তাঁর কল রেকর্ড ও গতিবিধির উপর নজর বাড়ানো হয়েছে। এদিকে, স্থানীয়দের একাংশের দাবি, খুনের দিন দত্তাবাদের আশেপাশে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। তবে, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিডিও-র কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy