“থানার আইসি একতরফা হয়ে গিয়েছেন…”-অনুব্রতর পর ফের IC-কে নিশানা, বিস্ফোরক সিদ্দিকুল্লা

বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডলের পর এবার রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সরাসরি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার আইসি-র বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে তিনি প্রকাশ্যেই থানা ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মন্ত্রীর এই বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার সাতগাছিয়ার বিধায়ক কার্যালয় থেকে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, “মন্তেশ্বর থানার আইসি-র বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আসছে, যা শুনতে আমার কষ্ট হচ্ছে।” তিনি অভিযোগ করেন, আইসি “একতরফা হয়ে গিয়েছেন” এবং “গোষ্ঠীস্বার্থে কাজ করছেন।” নাম না করে তিনি মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহমদ হোসেন শেখকেও নিশানা করেন, যার সঙ্গে মন্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে বলে জানা যায়।

মন্ত্রী আরও বলেন, “আমি শুনতে পাচ্ছি, রাতের অন্ধকারে আপনি (আইসি) নিজে বাড়ির দরজায় লাঠি দিয়ে ঠকঠক করছেন। মেয়েরা আতঙ্কিত হয়ে দরজা খুলছে।” এই ধরনের পুলিশি কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা করে তিনি বলেন, “যদি আপনি না মানেন, তাহলে বাধ্য হয়ে হয়তো আমাকে থানা ঘেরাওয়ের ডাক দিতে হবে। মন্ত্রী যাবে, এমএলএ যাবে। সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুলটা বাঁকানোর জায়গায় তৈরি হবে।”

উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই মন্ত্রীর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে তার কনভয় আক্রান্ত হয় এবং কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনার পরই তিনি জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার, এমনকি মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগ জানান। সেই সময় থেকেই মন্ত্রী মন্তেশ্বর আইসি-র বিরুদ্ধে উপযুক্ত নিরাপত্তা দিতে না পারার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি, তিনি তার নিজের দলের মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহমদ হোসেন শেখকেও কাঠগড়ায় তোলেন, যা তাদের মধ্যকার ঠান্ডা লড়াইকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসে।

মন্ত্রীর দাবি, হামলার অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শের সঙ্গে এই ধরনের পুলিশি আচরণ মানানসই নয়, কারণ তারা কাটমানি, মারামারি, দালালি সহ্য করেন না। মন্ত্রী আইসিকে প্রশ্ন করেন, “কেন এইভাবে খাঁকি পোশাকের ও মুখ্যমন্ত্রীর বদনাম করছেন? আপনি দায়িত্ব পালন করতে না পারলে ছেড়ে দিন।”

এই বিষয়ে পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ প্রশাসন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। বিজেপির পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বলা হয়েছে, “মুখ্যমন্ত্রী যখন নিজেই পুলিশমন্ত্রী, তখন তার এক মন্ত্রীর যদি পুলিশের প্রতি ভরসা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের ভরসা কোথায় থাকবে?” অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দেব টুডু বলেন, এই ধরনের মন্তব্য কোন প্রেক্ষিতে করা হয়েছে তা না জেনে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy