তারাপীঠ মন্দিরের শৃঙ্খলা ও পুজো পদ্ধতিতে নৈরাজ্য এবং ‘টাকার খেলা’ বন্ধ করতে কঠোর অবস্থান নিলেন রামপুরহাটের মহকুমা শাসক (SDO) রাঠোর অশ্বিনী বাবুসিংহ। বুধবার সেবাইতদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, পূর্বতন জেলা শাসকের (DM) বেঁধে দেওয়া সমস্ত নিয়মাবলী এবার থেকে কঠোরভাবে পালন করতে হবে। প্রশাসনের এই কড়া বার্তায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ পুণ্যার্থীরা।
অভিযোগ রয়েছে, তারাপীঠ মন্দিরে ভিড় বাড়ার সুযোগে এক শ্রেণির সেবাইতরা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভিআইপি দর্শন ও পুজো করাতেন। এর ফলে সাধারণ পুণ্যার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো এবং প্রায়শই বিশৃঙ্খলা, ধাক্কাধাক্কি ও মারধরের ঘটনা ঘটত।
এই অব্যবস্থা দূর করতে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি পূর্বতন জেলা শাসক বিধান রায় কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করেন। সেই নিয়ম অনুযায়ী—
-
প্রথম এক ঘণ্টা সাধারণ লাইনের পুণ্যার্থীরা প্রবেশের সুযোগ পাবেন।
-
বিশেষ লাইনে প্রবেশের জন্য কুপন নেওয়া বাধ্যতামূলক।
-
গর্ভগৃহে প্রবেশের পর বেরনোর পথে কাউকে আর ঢুকতে দেওয়া যাবে না।
-
স্থানীয় পুণ্যার্থীরা প্রমাণপত্র দেখিয়ে বিনামূল্যে বিশেষ প্রবেশাধিকার পাবেন।
প্রশাসনের চাপে মন্দির কমিটি ইতিমধ্যেই গর্ভগৃহে অঞ্জলি বা শৃঙ্গার পুজো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুণ্যার্থীরা এখন গর্ভগৃহের বাইরে মা তারার চরণে অর্ঘ্য অর্পণ করতে পারবেন।
মহকুমা শাসক রাঠোর অশ্বিনী বাবুসিংহ জানিয়েছেন, প্রতি মাসের ১ তারিখ মন্দির কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে নিয়মনীতি কঠোরভাবে মানা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে শৃঙ্খলা নিয়ে রিভিউ মিটিং করা হবে। পুণ্যার্থীদের অভিযোগ, এর আগেও নিয়ম তৈরি হলেও সেবাইতদের একাংশ তা ভঙ্গ করেছেন। এবার দেখার, নতুন মহকুমা শাসক কতদিন তারাপীঠের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারেন।