দীপাবলি মানেই সবার ঘরে আলোর রোশনাই। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল শীতলা গ্রামের পিছিয়ে পড়া ও আর্থিকভাবে দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এই উৎসবটি আসে এক ভিন্ন বার্তা নিয়ে— আশার আলো। এই সময়ের উপার্জনেই তারা জোগাড় করে পড়াশোনার খরচ।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় এই ছেলে-মেয়েরা নিজেদের হাতে তৈরি করে মোমের প্রদীপ। এই কাজে মূলত অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরাই উদ্যোগী। তাদের সঙ্গে ছোট বাচ্চারাও আনন্দে হাত মেলায় এবং প্রদীপে রং করে।
কীভাবে তৈরি হচ্ছে এই বিশেষ প্রদীপ?
ছাত্র-ছাত্রীরা প্রথমে মাটির প্রদীপ সংগ্রহ করে। এরপর মোম গলিয়ে সেই প্রদীপের মধ্যে ভরা হয় এবং একটি সলতে দেওয়া হয়, যাতে এই প্রদীপে আলাদা করে তেল ব্যবহারের প্রয়োজন না হয়। এরপর পুরো প্রদীপের উপরে সাদা, হলুদ সহ নানা রং করা হয়। রৌদ্রে শুকানোর পরে বাহারি রং এবং নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়, যা এক অপরূপ সৌন্দর্য তৈরি করে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার সুমিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “এখানে মূলত অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা এই প্রদীপগুলো বানায়। তাদের সঙ্গে ছোট ছোট বাচ্চারাও আনন্দের সঙ্গে হাতে হাত মেলায় আর রং করে।”
রাজ্য ছাড়িয়ে প্রদীপ যাচ্ছে বিদেশেও:
এই পড়ুয়াদের তৈরি প্রদীপ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি ভিন রাজ্যেও ভালো সাড়া পেয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের এই হস্তশিল্প আমেরিকার মতো বিদেশেও পৌঁছয়। প্রদীপ বিক্রি করার পর যে অর্থ উপার্জন হয়, সেগুলি দিয়েই ছাত্র-ছাত্রীরা দীপাবলির পরে বই, খাতা, পেন এবং পড়াশোনার অন্যান্য কাজে খরচ করে।
তাই আসানসোলের শীতলা গ্রামের এই ছেলে-মেয়েদের কাছে দীপাবলি কেবল একটি উৎসব নয়, বরং শিক্ষা ও ভবিষ্যতের খরচ জোগাড় করার একটি বড় প্ল্যাটফর্ম, যা তাদের জীবনে নতুন আশার আলো দেখায়।