স্মার্টফোনে সঞ্চারসাথী অ্যাপ (Sanchar Saathi) বাধ্যতামূলকভাবে ইনস্টল করার নির্দেশ নিয়ে শুরু হওয়া প্রবল বিতর্কের মুখে পিছু হটল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া মঙ্গলবার জানিয়েছেন, অ্যাপটি এখন থেকে ব্যবহারকারীদের জন্য ঐচ্ছিক (Optional) হিসেবে থাকবে। এর অর্থ হলো, নতুন মোবাইলে এই অ্যাপ আর প্রি-ইনস্টলড থাকবে না, এবং চাইলেই ব্যবহারকারীরা এটি মুছে ফেলতে পারবেন।
মন্ত্রীর সাফাই:
সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সিন্ধিয়া বলেন, “যদি আপনি সঞ্চার সাথী অ্যাপ মোবাইলে না চান, তাহলে আপনি এটি মুছে ফেলতে পারবেন। এটি ঐচ্ছিক… এই অ্যাপটি সকলের কাছে তুলে ধরা আমাদের কর্তব্য। এটি তাদের ডিভাইসে রাখা বা না রাখা, তা ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করে।”
এর আগে ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকম (DoT) নির্দেশ দিয়েছিল, জালিয়াতি সনাক্তকরণের জন্য সব নতুন ডিভাইসে ৯০ দিনের মধ্যে এই অ্যাপটি আগে থেকে ইনস্টল করতে হবে। এই নির্দেশের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল।
কংগ্রেসের ‘স্নুপিং অ্যাপ’ তকমা:
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢড়া এই অ্যাপটির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি সঞ্চারসাথীকে একটি “স্নুপিং অ্যাপ” বলে অভিহিত করেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্র ও নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, “সঞ্চার সাথী একটি স্নুপিং অ্যাপ ও স্পষ্টতই এটি হাস্যকর। নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার রয়েছে। সরকার সবকিছু না দেখে পরিবার ও বন্ধুদের কাছে বার্তা পাঠানোর জন্য প্রত্যেকেরই গোপনীয়তার অধিকার থাকা উচিত।” কংগ্রেস অবিলম্বে এই অ্যাপটি বাতিল করার দাবি জানিয়েছিল।
সরকারের বক্তব্য ও অ্যাপলের বিরোধিতা:
এই বিতর্ক সত্ত্বেও সরকার জানিয়েছে যে, DoT-এর আদেশের মূল লক্ষ্য হলো দেশে নকল হ্যান্ডসেট ও সাইবার জালিয়াতি থেকে গ্রাহকদের রক্ষা করা। কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রক জানিয়েছে, এই অ্যাপ প্রি-ইনস্টল করার নির্দেশিকা নকল হ্যান্ডসেট কেনা থেকে সুরক্ষা দেবে এবং টেলিকম সম্পদের সন্দেহজনক অপব্যবহার রোধ করা সহজ হবে।
তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, DoT-এর এই বাধ্যতামূলক নির্দেশ মানতে অস্বীকার করার পরিকল্পনা করেছিল মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। তারা নয়াদিল্লিকেও এই বার্তা পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
বিরোধিতা ও বিতর্ক বাড়তেই সরকার এবার এই অ্যাপটিকে ঐচ্ছিক ঘোষণা করে বিতর্কের পরিসমাপ্তি ঘটাতে চাইল।