সম্পত্তির লোভে নিজের ১১ বছরের ভাইপোকে খুন করে এলাকায় ‘ছেলেধরা’র গুজব রটিয়েছিল জেঠু। এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাইক ব্যবহার করে প্রচার করেছিল যে, ছেলেধরার দল ভাইপোকে খুন করে কিডনি নিয়ে পালিয়েছে। এই গুজবে তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য, ঘটেছিল গণপিটুনির ঘটনাও। অবশেষে সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত জেঠু এনজার নবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বারাসত আদালত।
বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতের সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক প্রজ্ঞাগার্গী ভট্টাচার্য (হোসেন) এই রায় ঘোষণা করেন। বিচারক খুনের জন্য যাবজ্জীবন এবং অপহরণ ও তথ্য লোপাটের দায়ে আরও ৭ বছরের সাজা শুনিয়েছেন। পাশাপাশি অপরাধীকে ৬ লক্ষ টাকা জরিমানারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লেগেছে প্রায় ১৬ মাস। আদালতের এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহত নাবালক ফারদিন নবীর বাবা গোলাম নবী।
তবে রায় ঘোষণার পরেই আদালত চত্বরে তৈরি হয় চরম উত্তেজনা। ভরা এজলাসেই সাজাপ্রাপ্ত আসামির মেয়ে নিহত ফারদিনের পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নজরে আসতেই কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন বারাসত জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া।
উল্লেখ্য, গত বছর ৯ জুন খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় বারাসতের কাজিপাড়ার ছোট্ট ফারদিন। পরে বাড়ির পাশের একটি শৌচাগারের কাছে তার দেহ মেলে। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, জেঠু এনজার নবীই সম্পত্তির বিবাদে ভাইপোকে শ্বাসরোধ করে খুন করে এবং পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে ‘কিডনি চোর’ ও ‘ছেলেধরা’র গল্প ফাঁদে।