সোমবার প্রকাশিত পারচেজিং ম্যানেজারস’ ইনডেক্স (PMI) তথ্য অনুসারে, নভেম্বরেও এশিয়ার উৎপাদনশীল অর্থনীতিগুলো ধীরগতির চাহিদার চাপ থেকে মুক্তি পায়নি। অঞ্চলের বড় উৎপাদক দেশগুলোর কারখানা কার্যক্রমে পতন অব্যাহত রয়েছে।
বৃহৎ অর্থনীতিতে সংকোচন:
চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানের মতো বৃহৎ রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতিগুলো কারখানা কার্যক্রমে সংকোচনের কথা জানিয়েছে।
চীন: বেসরকারি PMI অনুসারে নভেম্বরে চীনের কারখানা কার্যক্রম পুনরায় সংকোচনের দিকে ফিরে গেছে। ক্যাপিটাল ইকোনমিকস-এর অর্থনীতিবিদ জিচুন হুয়াং জানান, চাহিদা সামান্য বাড়লেও পর্যাপ্ত মজুত এবং দুর্বল উৎপাদনের কারণে চাপ কমেনি। উৎপাদন সূচক চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমেছে, যা চীনে বিদ্যমান ডিফ্লেশনারি (Deflationary) চাপের ইঙ্গিত বহন করে।
জাপান: জাপানের PMI দেখায়, নতুন অর্ডার দুই-দেড় বছর ধরে ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। ধীরগতির বিশ্ব অর্থনীতি এবং কর্পোরেট বাজেট সংকোচনকে এর প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আশার আলো উদীয়মান বাজারে:
অন্যদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু উদীয়মান বাজার—ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম এবং মালয়েশিয়া—তুলনামূলকভাবে ভালো বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে।
ভারত: ব্যতিক্রমী বৃদ্ধি:
ভারতেও উৎপাদন বৃদ্ধি কিছুটা ধীর হয়েছে, তবে দেশের PMI এখনও শীর্ষস্থানীয় এশীয় উৎপাদকদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
অন্যান্য অর্থনৈতিক সূচকও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি দৃঢ়গতির বৃদ্ধি বজায় রেখেছে।
সদ্য প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ভারতের মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা মূলত শক্তিশালী ভোগব্যয় দ্বারা পরিচালিত।
ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী বিশ্লেষকরা:
যদিও PMI তথ্যে সংকোচন দেখা গেছে, ক্যাপিটাল ইকোনমিকস-এর এশিয়া অর্থনীতিবিদ শিভান টান্ডন জানান, “এশিয়ার অধিকাংশ দেশ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রপ্তানিতে শক্তিশালী বৃদ্ধি দেখিয়েছে। আমাদের বিশ্লেষণে মনে হচ্ছে, অঞ্চলের রপ্তানিনির্ভর উৎপাদন খাতের নিকটবর্তী ভবিষ্যৎ এখনও ইতিবাচক।” তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির অগ্রগতি আগামী মাসগুলোতে পরিস্থিতি উন্নত করতে পারে।