প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্য বাধ্যতামূলক টেট (TET) পাসের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে এবার সরাসরি দ্বারস্থ হলো উত্তরপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু সরকার। আদালতের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য একাধিক আবেদন জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। এই নির্দেশের ফলে দুই রাজ্যের প্রায় ৫.৮৬ লক্ষ শিক্ষক চরম সমস্যার মুখে পড়তে চলেছেন।
গত ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীর যে সব শিক্ষকের পাঁচ বছরের বেশি চাকরি বাকি আছে, তাঁদের অবশ্যই দুই বছরের মধ্যে টেট পাশ করতে হবে। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, এই পরীক্ষায় পাশ করলে শিক্ষকদের যোগ্যতা ও দক্ষতা বাড়বে।
উত্তরপ্রদেশের ১.৮৬ লক্ষ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
সর্বভারতীয় প্রাথমিক শিক্ষক ফেডারেশন তাদের আবেদনে জানিয়েছে, কোর্টের এই সিদ্ধান্তের জেরে শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশেই প্রায় ১.৮৬ লক্ষ শিক্ষক সমস্যার মুখে পড়বেন।
সর্বভারতীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুশীল কুমার পান্ডে জানান, শিক্ষকদের স্বার্থ রক্ষিত হোক— সেই দাবি নিয়েই তাঁরা কোর্টে আবেদন করেছেন। তিনি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করে বলেন, “কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হলে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়বে।”
‘৪ লাখ শিক্ষক ও লেখাপড়ার মান প্রশ্নের মুখে’: তামিলনাড়ু
অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তামিলনাড়ু সরকারও। কোর্টে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে প্রায় ৪ লাখ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে। শুধু তাই নয়, স্কুলগুলো শিক্ষকশূন্য হয়ে যাবে।
তামিলনাড়ু সরকারের যুক্তি, শিক্ষকরা চাকরি বাঁচাতে যদি টেটের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন, তবে শিক্ষা ব্যবস্থাও লাটে উঠবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার মান কমবে, যার ফল মারাত্মক হতে পারে।
রাইট টু এডুকেশন আইন প্রয়োগের বিষয়েও কোর্টে যুক্তি দিয়েছে তামিলনাড়ু। তাদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা-সহ একাধিক রাজ্যের ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগের আইনে ইতোপূর্বে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। কারণ, সেই সব রাজ্যে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের তুলনায় অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের সংখ্যা বেশি ছিল। এবারও সেই নীতি অনুসরণ করা উচিত।
শিক্ষক ফেডারেশন এবং রাজ্য সরকারগুলোর এই সম্মিলিত আপিল এখন সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
