মুম্বইয়ের মালাড এলাকায় এক যৌনকর্মীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল এক অটোচালক। গত ২৫ সেপ্টেম্বরের এই নৃশংস ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত উত্তরপ্রদেশের মথুরায় আত্মগোপন করেছিল। মঙ্গলবার পুলিশ তাকে মথুরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
যেভাবে ঘটেছিল নৃশংস ঘটনা
২৫ সেপ্টেম্বর মালাডের চার্চ রোড এলাকার সাওয়ান্ত কম্পাউন্ডে এক মহিলাকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, মৃত মহিলা পেশায় একজন যৌনকর্মী।
প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হলেও, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে এবং খুনের আগে তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছিল। এর পরেই পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) এবং ৩৭৬ (ধর্ষণ) ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে।
সিসিটিভি ফুটেজে অপরাধীর শনাক্তকরণ
অপরাধীর কোনো সূত্র না পেয়ে তদন্তকারীরা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। একটি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার রাতে ওই মহিলার সঙ্গে ছিল অভিযুক্ত অটোচালক চন্দ্রপাল রামখিলাড়ি, ওরফে নেতা (৩৪)। একটি ক্যামেরায় স্পষ্ট ধরা পড়ে যে, চন্দ্রপাল ওই মহিলারই ওড়না তাঁর গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, টাকা-পয়সা সংক্রান্ত কোনও বিবাদের জেরেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। বচসা চলাকালীনই চন্দ্রপাল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই কাণ্ড ঘটায়।
মথুরা থেকে গ্রেফতার
সিসিটিভি ফুটেজ থেকে অভিযুক্তকে শনাক্ত করার পর পুলিশ প্রযুক্তিগত তদন্ত এবং গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জানতে পারে যে, আগ্রার বাসিন্দা চন্দ্রপাল মুম্বই থেকে পালিয়ে উত্তরপ্রদেশের মথুরায় গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে।
দেরি না করে মুম্বই পুলিশের একটি বিশেষ দল মথুরায় রওনা হয় এবং স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে সে।
পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে মথুরার স্থানীয় আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালত তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে মুম্বই নিয়ে আসার অনুমতি দিয়েছে। তাকে মুম্বইয়ে এনে খুনের সঠিক কারণ এবং আর কেউ এই ঘটনায় জড়িত ছিল কিনা, তা বিস্তারিত জেরা করে খতিয়ে দেখা হবে।