উত্তরবঙ্গ জুড়ে জাঁকিয়ে বসা শীত আর ঘন কুয়াশার দাপটে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা। শনিবার সকালে আলিপুরদুয়ার জেলার গরম বস্তি এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি চারচাকা গাড়ি ও ট্রেলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন তিন জন। ঘন কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়াই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি চারচাকা গাড়ি (নম্বর WB 16AN 8787) হাসিমারা থেকে আলিপুরদুয়ারের দিকে আসছিল। অন্যদিকে, অসম থেকে বীরপাড়ার দিকে যাচ্ছিল একটি বিশাল ট্রেলার। সকালের আকাশ ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকায় সামনের রাস্তা পরিষ্কার ছিল না। গরম বস্তি এলাকায় দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষের অভিঘাত এতটাই তীব্র ছিল যে, ছোট গাড়িটি কার্যত লোহার পাত ও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ট্রেলারটিও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়।
বিকট শব্দ শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছন নিমতি পুলিশ ফাঁড়ির ওসি মিঠুন বর্মন ও তাঁর দল। পুলিশ ও স্থানীয়দের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গাড়ির ভেতর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের উদ্ধার করে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ব্যক্তিরা আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম এলাকার বাসিন্দা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, নতুন বছরের আগে তাপমাত্রার পারদ আরও ১-২ ডিগ্রি নামতে পারে। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ—উভয় প্রান্তেই সকালের দিকে ঘন কুয়াশার দাপট বজায় থাকবে। কয়েকদিন আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাটেও একইভাবে কুয়াশার কারণে বাস-লরির সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। বারংবার ঘটে চলা এই দুর্ঘটনায় জাতীয় সড়কে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে পুলিশ ও প্রশাসন। ইতিমধ্যেই পুলিশ দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি দুটিকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।