মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এবং অনুপ্রবেশ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যের জেরে রাজনীতিতে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। কংগ্রেসের তরফে দলের কমিউনিকেশনস-এর সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ সরাসরি অমিত শাহকে “দেশীয়ভাবে তৈরি গণবিধ্বংসী অস্ত্র (WMD)” এবং “ভীতিপ্রদর্শনকারী গণ মেরুকরণের অস্ত্র (WIMP)” বলে অভিহিত করেছেন।
কংগ্রেস সাংসদ এক্স (পূর্বে ট্যুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে বলেন, “তিনি দেশীয়ভাবে তৈরি একটি WMD – অর্থাৎ গণবিধ্বংসী অস্ত্র – এবং একটি WIMP – অর্থাৎ ভীতিপ্রদর্শনকারী গণ মেরুকরণের অস্ত্র।”
পবন খেরার পাল্টা চ্যালেঞ্জ:
এর আগে কংগ্রেস সাংসদ পবন খেরা অমিত শাহের এই মন্তব্যকে ‘হিন্দু-মুসলিম আগুন উস্কে দেওয়ার’ এবং আসন্ন নির্বাচনের আগে ভোটারদের মেরুকরণের একটি কৌশল বলে অভিহিত করেন। খেরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রশ্ন করেন, মুসলিম জনসংখ্যা যদি তাঁর দাবি অনুযায়ী অনুপ্রবেশের কারণে বেড়ে থাকে, তাহলে গত ১১ বছর ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঠিক কী করছিলেন?
পবন খেরা আরও লেখেন, “তিনি (অমিত শাহ) এক্স-এ মুসলিমদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার দিকে ইঙ্গিত করে বোঝাতে চেয়েছিলেন যে ভারতে ব্যাপক ‘মুসলিম অনুপ্রবেশ’ হচ্ছে। তিনি দ্রুত বুঝতে পারেন যে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এবং মুসলিমদের দিকে ছোড়া বুমেরাংটি ঘুরে এসে তাঁকেই আঘাত করেছে। তাই তাঁর পোস্টটি সঙ্গে সঙ্গে মুছে ফেলা হয়।”
নির্বাসনের তথ্যে বিজেপি-কে কোণঠাসা করার চেষ্টা:
পবন খেরা তাঁর পোস্টে বিজেপি সরকারের অধীনে অনুপ্রবেশকারীদের নির্বাসনের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, “২০০৫ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে কংগ্রেস সরকার ৮৮,৭৯২ জন বাংলাদেশী নাগরিককে নির্বাসিত করেছিল। বিজেপি শাসনে ১১ বছরে ১০,০০০-এরও কম লোককে নির্বাসিত করা হয়েছে। তবুও, আমরা কখনও বড়াই করিনি, আর বিজেপি কখনও চুপ করবে না। কথায় আছে, খালি কলসি বাজে বেশি!”
অমিত শাহের দাবি:
প্রসঙ্গত, অমিত শাহ দাবি করেছেন যে ২০০১-২০১১ সাল পর্যন্ত মুসলিম জনসংখ্যা ২৪.৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে হিন্দু জনসংখ্যা বেড়েছে ১৬.৮ শতাংশ হারে। তিনি ১৯৫১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পরিচালিত আদমশুমারির তথ্য তুলে ধরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই বৈষম্যের প্রধান কারণ হিসেবে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে “অনুপ্রবেশ”-কে দায়ী করেছেন।