উত্তরবঙ্গের ধস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মঙ্গলবার ফের একবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। এদিন তিনি মিরিক ও সুখিয়াপোখরি পরিদর্শন করেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির হাতে আর্থিক সাহায্য ও চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন।
মঙ্গলবার কার্শিয়াংয়ের সার্কিট হাউজ থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে মিরিকের ধস কবলিত এলাকা ও মিরিক লেক পরিদর্শন করেন।
আর্থিক সাহায্য ও চাকরির নিয়োগপত্র
মিরিকে: ৪ অক্টোবরের ধসে মিরিকের রিনচেন লামা নামে এক বাসিন্দার পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের হাতে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন। ধসে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর তৈরি করার জন্য তিনি ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকাও তুলে দেন।
সুখিয়াপোখরিতে: মুখ্যমন্ত্রী সুখিয়াপোখরি ব্লক অফিসে গিয়ে ধসে মৃত ১০ জনের পরিবারের হাতে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। এছাড়া পাঁচটি পরিবারের হাতে ঘর নির্মাণের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য ও ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আবাসন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, জিটিএ চিফ এগজিকিউটিভ অনিত থাপা-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
বিরোধীদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা
সুখিয়াপোখরিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ ও প্রশাসন-সহ উদ্ধারকাজে সাহায্যকারী সমস্ত কর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং একইসঙ্গে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে কড়া সুর চড়ান।
তিনি বলেন, “মিরিক-সহ যেসব জায়গায় ধসের ঘটনা ঘটেছে, সেসব জায়গায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত রাস্তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। আর কেউ কেউ রাজনীতি করছে ধূপগুড়ি আর ময়নাগুড়ি নিয়ে। কেউ কেউ মানুষকে হতাশ করছেন। তাঁদের বলব মানুষকে হতাশ না-করে কাজ করুন। আপনাদেরও দায়িত্ব রয়েছে।”
কেন্দ্রকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কিছু করবেন না অথচ বিজেপির টাকায় বড় বড় ভাষণ দেবেন। একদিন ঘুরে ছবি তুলে সব পালিয়ে গিয়েছেন। তারপর আর তাদের দেখা গিয়েছে? বাড়ি বানাবো আমরা, ব্রিজ বানাবো আমরা, চিকিৎসা করব আমরা, ত্রাণ দেব আমরা…কেন্দ্রের কোনো ভূমিকা নেই। শুধু রাজনীতি।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বলা হয়েছিল, আমি নাকি মিরিক যাচ্ছি না। আপনি ভগবান নাকি? আমরা একবার ত্রাণ দিয়ে পালিয়ে গেলাম তা নয়। এটা একটা প্রক্রিয়া। এটা আমাদের দায়িত্ব, আমরা মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। এটা করে আমরা কাউকে দয়া করছি না। আমাদের দায়িত্ব। কিছু করে না, খালি বড় বড় কথা আর বদনাম। আমি ওদের সঙ্গে নেই। আমি মানুষের সঙ্গে।”
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী লামাহাটার কাছে পশুপতিতে একটি ইকো-ট্যুরিজম স্পট তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার তিনি দার্জিলিংয়ে জিটিএ, পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে রিভিউ মিটিংয়ে বসবেন।