মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি এই পরিস্থিতিকে মোদী সরকারের ‘বিদেশ নীতির ব্যর্থতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং একই সঙ্গে মোদীর ‘নীরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মল্লিকার্জুন খাড়গে লেখেন, “ভারতের জাতীয় স্বার্থই সর্বোচ্চ। আমাদের জোটনিরপেক্ষতার নীতিতে নিহিত কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন একটি পরীক্ষিত নীতি। যেকোনো দেশ যদি এর জন্য একতরফাভাবে ভারতকে শাস্তি দিতে চায়, তাহলে তারা বুঝতে পারেনি যে ভারত কোন কঠিন ধাতু দিয়ে তৈরি।” তিনি আরও বলেন, অতীতে সপ্তম নৌবহর থেকে শুরু করে পরমাণু পরীক্ষার পর নিষেধাজ্ঞার হুমকি—সব পরিস্থিতিতেই আমরা আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আত্মসম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে পরিচালনা করেছি। খাড়গে দাবি করেন, “ট্রাম্পের এই ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এসেছে, যখন আমাদের কূটনীতি ভয়াবহভাবে পিছিয়ে পড়ছে।”
কংগ্রেস প্রধান আরও লেখেন, “নরেন্দ্র মোদীজি, ট্রাম্প যখন তিরিশেরও বেশি বার দাবি করেন যে তিনি সংঘর্ষবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছেন, তখন আপনি চুপ ছিলেন। ২০১৯ সালের ৩০শে নভেম্বর ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে তিনি ব্রিকস দেশগুলির ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপাবেন, তখন প্রধানমন্ত্রী মোদী সেখানে বসে মুচকি মুচকি হাসছিলেন। আর ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন ‘ব্রিকস মৃত’।”
খাড়গে বলেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা অনেক মাস ধরে চলছিল এবং সবাই তা জানত। কিন্তু মোদী সরকার কৃষি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা-সহ একাধিক খাতে এর প্রভাব কমাতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি বলেন, “আপনার মন্ত্রীরা আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে ব্যর্থ হন। আর এখন ট্রাম্প আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন, কিন্তু আপনি চুপ আছেন।”
কংগ্রেস প্রধান আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ২০২৪ সালে আমেরিকায় ভারতের রপ্তানি ৭.৫১ লাখ কোটি টাকার ছিল, যার ওপর ৫০ শতাংশ শুল্কের অর্থ হলো ৩.৭৫ লাখ কোটি টাকার অতিরিক্ত বোঝা। এর ফলে এমএসএমই, কৃষি, দুগ্ধজাত পণ্য, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, রত্ন ও অলংকার, ওষুধ, পেট্রোলিয়াম পণ্য এবং সুতির তৈরি পোশাকের মতো ক্ষেত্রগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, “আপনার সরকার এটা কীভাবে মোকাবিলা করবে তা বুঝতে পারছে না। আপনি কংগ্রেসের ৭০ বছরের শাসনের ওপর এই বিদেশ নীতির বিপর্যয়ের দোষ চাপাতে পারবেন না।”