‘কুলদীপ সেঙ্গার আমাকেমেরে ফেলতে পারে!’ প্রাণভয়ে কাঁপছেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা

উন্নাও ধর্ষণ মামলার নৃশংস স্মৃতি ফের ফিরে এল জনমানসে। প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল্লি হাইকোর্ট স্থগিত করার পর থেকেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নির্যাতিতা তরুণী। তাঁর আশঙ্কা, সেঙ্গার অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং জেলের বাইরে বা প্যারোলে থাকাকালীন নিজের অনুচরদের দিয়ে তাঁকে যে কোনো মুহূর্তে হত্যা করাতে পারেন। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবার উত্তরপ্রদেশ ছেড়ে কংগ্রেস শাসিত কোনো রাজ্যে স্থানান্তরের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে নিজের মায়ের সঙ্গে বিক্ষোভে বসেন ওই তরুণী। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানান, ২০১৭ সাল থেকে তাঁর ওপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেছে, তা আজও থামেনি। তাঁর কথায়, “আমাকে ধর্ষণ করা হয়েছে, আমার বাবাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। ২০১৯ সালে আমাকে খুনের উদ্দেশ্যে পথ দুর্ঘটনার ছক কষা হয়েছিল। আজও আমি প্রতিদিন মরণের ভয়ে বেঁচে আছি।” নির্যাতিতা আরও জানান, তাঁর স্বামী কাজে যেতে পারছেন না এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ এখন চরম অন্ধকারের মুখে। এই সংকটকালে তিনি রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন। রাহুল গান্ধী তাঁকে সুপ্রিম কোর্টে লড়াইয়ের জন্য শীর্ষ আইনজীবীর সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে, এই সংবেদনশীল ইস্যু নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী ওম প্রকাশ রাজভরের একটি মন্তব্য বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছে। দিল্লিতে নির্যাতিতার বিক্ষোভ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজভর হাসতে হাসতে উত্তর দেন, “ইন্ডিয়া গেট কেন? ঘর তো উন্নাওতে।” একজন ধর্ষিতার অসহায়ত্ব নিয়ে মন্ত্রীর এই উপহাসে গর্জে উঠেছেন বিরোধীরা। নির্যাতিতা তরুণী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে রাজভরকে অবিলম্বে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স (টুইটার) হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “বিজেপি বিধায়ককে জামিন দেওয়া হচ্ছে, আর তাদের সহযোগী দলের মন্ত্রীরা নির্যাতিতাকে নিয়ে উপহাস করছেন। এটাই কি ‘বেটি বাঁচাও’-এর আসল রূপ?” এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের একবার প্রশ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা ও নারী নিরাপত্তা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy