প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় বড়সড় পরিবর্তন এনে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় বাতিল করে দিল। ফলে, যে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তা আপাতত খারিজ হয়ে গেল। এই রায় ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের শিক্ষক মহলে স্বস্তি ও খুশির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
এই রায়ের ফলে যে শিক্ষকরা এতদিন দুশ্চিন্তায় ছিলেন, তাঁরা বড় ধরনের স্বস্তি পেয়েছেন। অনেকেই এই রায়কে ‘সত্যের জয়’ বলে অভিহিত করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আইনজীবী মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া:
তবে এই রায়ে খুশি নন মামলাটির অন্যতম আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “চাকরি আপাতত বহাল থাকল ঠিকই, কিন্তু এতে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি প্রশ্রয় পেল। আদালতে যে তথ্য দেওয়া হয়েছিল, সেটাকে যদি গুরুত্ব না দেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও দুর্নীতি হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এর খারাপ ফল হবে।”
অন্যদিকে, তৃণমূল সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায়ের পর প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, “৩২ হাজার চাকরি বাতিল করার পর যাঁরা ওনাকে ভগবান বলেছিল, আজ তারাই বলছে উনি শয়তান! উনি বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছেন।” তিনি আরও বলেন, সিপিএম-বিজেপির মিলে শিক্ষক নিয়োগ ইস্যুতে রাজনীতি করা ভালো লক্ষণ নয়।
ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়ে আপাতত ৩২ হাজার শিক্ষক স্বস্তিতে থাকলেও, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরস্পরবিরোধী মন্তব্যে রাজ্যের রাজনৈতিক এবং আইনি মহলে নতুন করে তাপ তৈরি হয়েছে।