ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলা কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেই নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশিতে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) এবং মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর)—টানা দু’দিন বঙ্গোপসাগরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মহড়া চালানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। কক্সবাজার এবং হাতিয়ার মধ্যবর্তী সমুদ্রসীমায় এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। সুরক্ষার স্বার্থে ওই নির্দিষ্ট এলাকায় সব ধরণের ট্রলার, মাছ ধরার নৌকা এবং বাণিজ্যিক নৌযান চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (ISPR)।
কূটনৈতিক মহলের একটি বড় অংশ এই মহড়াকে ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তপ্ত সম্পর্কের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করলেও, সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে এটি একটি ‘রুটিন মহড়া’। সাধারণত সামরিক সক্ষমতা যাচাই করতে দেশগুলো নির্দিষ্ট সময় অন্তর এমন পরীক্ষা চালিয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে বর্তমান চরম বিশৃঙ্খলা এবং ভারত-বিরোধী মনোভাবের আবহে এই মহড়া বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশজুড়ে অশান্তির আগুন জ্বলছে। কট্টর ভারত-বিরোধী নেতা হাদির মৃত্যুর পর নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন প্রান্তে হিন্দুদের ওপর হামলার খবর আসছে। সম্প্রতি প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রের অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি ধানমন্ডির ছায়ানট ভবন এবং উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কার্যালয়ের মতো সাংস্কৃতিক কেন্দ্রেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই দীপু চন্দ্র দাস ও অমৃত মণ্ডল নামে দুই হিন্দু যুবকের মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দাবি করেছে যে, অমৃত মণ্ডলের মৃত্যু কোনো সাম্প্রদায়িক ঘটনা নয়, বরং এটি চাঁদাবাজি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পরিণাম। তবে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর লাগাতার হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। এই চরম অস্থিতিশীলতার মধ্যে নৌবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া আন্তর্জাতিক মহলেও বিশেষ নজর কাড়ছে।