একসময় যে গ্রামের মানুষজন শুধু চিরাচরিত সবজি চাষের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন, সেই পুরুলিয়ার কাশীপুরের গগনাবাদ গ্রাম এখন ফুল চাষের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ৮০ শতাংশেরও বেশি গ্রামবাসী ফুল চাষকে তাদের প্রধান জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছেন এবং এতে লাভের মুখও দেখছেন। ফুল চাষের পাশাপাশি রকমারি ফলের ও সবজির চারাও এখানে তৈরি হচ্ছে, যা এই গ্রামকে কৃষি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত দেখাচ্ছে।
ফুল চাষে সাফল্য:
গগনাবাদ গ্রামের দু’পাশের জমিতে গেলেই চোখে পড়ে নানা ধরনের ফুলের চাষ। গ্রামের ফুল চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফুলের চারা কেবল পুরুলিয়াতেই নয়, ভিন জেলার ধানবাদ, আসানসোল এবং বাঁকুড়াতেও বিক্রি করছেন। এমনকি প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও এখানকার ফুলের চারা যাচ্ছে।
গ্রামবাসীদের এই পরিবর্তনের কারণ হলো, সবজি চাষে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়া। এতে অনেক সময় তাদের মাথায় হাত পড়ত। সেই ঝুঁকি এড়াতে বিকল্প হিসেবে ফুল চাষ বেছে নিয়েছেন তারা। এতে একদিকে যেমন ঝুঁকি কম, তেমনই লাভ বেশি।
ক্রেতাদের জন্য সুবিধা:
পুরুলিয়ার এই গ্রামে ফুলের চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতারাও অনেকটা সুবিধা পাচ্ছেন। কারণ, একচেটিয়াভাবে কোনো এক জেলার ওপর ফুলের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে না। গগনাবাদ গ্রামের ফুল চাষিদের দাবি, সারা বছরই তাদের ফুলের চারার বিশেষ চাহিদা থাকে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন এসে এই গ্রাম থেকে চারা কিনে নিয়ে যান।
গগনাবাদ গ্রামের এই সফল মডেল দেখিয়ে দিচ্ছে যে, চিরাচরিত কৃষির বাইরেও বিকল্প পেশা অবলম্বন করে অর্থনৈতিক উন্নতি সম্ভব। এই উদ্যোগ শুধু গ্রামের অর্থনৈতিক অবস্থাই চাঙ্গা করছে না, বরং অনেক নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি করছে।