দেশের অন্যতম সেরা স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS)-এর এক প্রবীণ চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এক মহিলা নার্সিং অফিসারকে যৌন হেনস্থা, অশালীন শব্দের ব্যবহার এবং কর্মস্থলে হুমকির মতো গুরুতর অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম এ কে বিসোই, যিনি এইমস-এর কার্ডিও থোরাসিক অ্যান্ড ভাসকুলার সার্জারি (CTVS) বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
সূত্রের খবর, এইমসের নার্সদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগের গুরুত্ব এমন ছিল যে, শুধুমাত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেই নয়, সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দফতরে (PMO) পর্যন্ত বিষয়টি জানানো হয়েছিল।
PMO-তে জমা পড়েছিল অভিযোগ:
এনডিটিভি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথমবার এক মহিলা নার্সিং অফিসার প্রবীণ চিকিৎসক এ কে বিসোই-এর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা দেখে গত ৯ অক্টোবর নার্সদের সংগঠন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়, অভিযুক্ত চিকিৎসক কর্তব্যরত অবস্থাতেই অভিযোগকারী নার্সদের হুমকি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর ব্যবহৃত ভাষা ছিল ‘যৌন উস্কানিমূলক’ এবং ‘অপমানজনক’। এই ঘটনাকে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির (Sexual Harassment at Workplace) ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সাসপেনশন এবং বিভাগীয় প্রধান পদে রদবদল:
প্রধানমন্ত্রী দফতরে অভিযোগ পৌঁছানোর পরই দ্রুত নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। ফলস্বরূপ, প্রবীণ চিকিৎসক এ কে বিসোইকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে সাসপেন্ড করা হয়। সাসপেনশনের নির্দেশিকাতেও নার্সদের সংগঠনের গুরুতর অভিযোগের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর জায়গায় বর্তমানে চিকিৎসক ভি দেবেগৌরৌকে সিটিভিএস বিভাগের প্রধান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
যদিও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও, চিকিৎসক এ কে বিসোই এখনও পর্যন্ত হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। ওই কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই অভিযুক্ত চিকিৎসককে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক এ কে বিসোইকে জিজ্ঞেস করা হলেও, তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।