বাংলাদেশের ময়মনসিংহে হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে খুনের পর দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় এবার বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সরব হলেন প্রভাবশালী ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেসম্যান রো খান্না ও রাজা কৃষ্ণমূর্তি। ঘটনার আঁচ পৌঁছেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট পর্যন্ত।
কী বললেন মার্কিন প্রতিনিধিরা?
মার্কিন কংগ্রেসম্যান রো খান্না সোশ্যাল মিডিয়ায় এক শোকবার্তায় লিখেছেন, “বাংলাদেশে হিন্দু গার্মেন্টস কর্মী দীপু চন্দ্র দাসের হত্যা অত্যন্ত নিষ্ঠুর। এই ঘৃণা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে আমাদের দ্ব্যর্থহীনভাবে সরব হতে হবে।” অন্যদিকে, কংগ্রেস সদস্য রাজা কৃষ্ণমূর্তিও এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। আরেক কংগ্রেস সদস্য থমাস সুজি খোদ মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেটকে চিঠি লিখে বাংলাদেশে হিন্দু খুনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং মার্কিন সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের অবস্থান:
মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের (State Department) এক মুখপাত্র সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, আমেরিকা যেকোনো ধরণের ধর্মীয় সহিংসতার বিরোধী। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শান্তি বজায় রাখতে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাকে তারা স্বাগত জানিয়েছে। একইসাথে ওয়াশিংটনের বার্তা— বাংলাদেশের প্রতিটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
ঘটনার প্রেক্ষাপট: এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড
গত ১৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের ভালুকায় পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানায় কাজ করার সময় ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে খুন করা হয়।
নৃশংসতা: খুনের পর তাঁর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়েতে ফেলে রেখে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
গ্রেফতার: এই ঘটনায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (RAB) ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা ‘মব কালচার’ বা গণপিটুনির সংস্কৃতি এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর ধারাবাহিক অত্যাচারে আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বড়সড় সংকটের মুখে পড়েছে।