রাজ্যে উৎসব শেষ হতেই শুরু হয়েছে চরম দুর্যোগ। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে যখন এমনিতেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় টানা বর্ষণ চলছে, ঠিক তখনই ঝাড়খণ্ডে অতিবৃষ্টির কারণে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (DVC) জল ছাড়তে শুরু করায় রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
৭০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হলো
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, ডিভিসি-র জল ছাড়ার পরিমাণ গত কয়েক দিনের তুলনায় অনেক বেড়েছে।
দুর্গাপুর ব্যারাজ: সকাল ১১টা থেকে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ৬৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে।
মাইথন ও পাঞ্চেত: মাইথন জলাধার থেকে ৪২ হাজার ৫০০ কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ২৭ হাজার ৫০০ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে ৭০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে।
সেচ বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি চলছে এবং আশপাশের নদী থেকেও দামোদরে জল ঢুকছে। দামোদরের জলস্তর উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে পারে—এই আশঙ্কাতেই ডিভিসি জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জলবন্দি হওয়ার আশঙ্কা ৬ জেলায়
এই অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ নীচু এলাকায় জল জমার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মূলত পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া এবং বাঁকুড়া জেলায় এর বড় প্রভাব পড়তে চলেছে। এখানকার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়তে পারে।
বৃষ্টির চরম সতর্কতা
আবহাওয়া দফতর আগেই জানিয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়ায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এই বৃষ্টির মধ্যেই ডিভিসি-র ছাড়া জল আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, নিম্নচাপটি বর্তমানে ওড়িশার অভ্যন্তরে অবস্থান করছে, এবং সময়ের সঙ্গে তার শক্তি কমছে। তবে এর প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় আগামীকাল পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সুন্দরবন এলাকাতেও সকাল থেকে মেঘলা আকাশ এবং ঝোড়ো হাওয়া বইছে।