দুর্গাপূজার আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্মীয় আচার-আচরণ নিয়ে আবারও তীব্র আক্রমণে শান দিয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বিজেপি নেতা ও আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে অভিযোগ করেছেন, তিনি মহাষ্টমীর অঞ্জলি না দিয়ে ষষ্ঠীর দিন ফুরফুরা শরীফে গিয়ে মুসলিম ভোটারদের বার্তা দিয়েছেন এবং কলমা পড়েছেন।
মহাষ্টমীর অঞ্জলি না দেওয়ার অভিযোগ
তরুণজ্যোতি তিওয়ারি অভিযোগ করেছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে দলীয় বৈঠক সবকিছুই সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করেন। যদি তিনি অঞ্জলি দিতেন, তবে তা নিশ্চয়ই তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজে থাকত, কিন্তু তিনি তা খুঁজে পাননি। বিজেপি নেতার মতে, পুজো উদ্বোধন করা আর ধর্ম পালন করা এক জিনিস নয়।
মমতাকে বেলাগাম আক্রমণ করে বিজেপি নেতা বলেছেন:
“মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ঈদের নামাজে হিজাব পরে যান, ঠিক তেমনি পূজো উদ্বোধন করতেও ওই একই সাজে যান।”
তিনি আরও বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী ঈদের নামাজে গিয়ে বলেন “লা ইলাহ ইল্লিলাহ” (আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই)। বছরের পর বছর তিনি এটা বলে চলেছেন। তরুণজ্যোতির বক্তব্যে স্পষ্ট, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এক আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ঈশ্বর নেই, তাই তিনি অঞ্জলির মতো হিন্দু রিচুয়াল থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন।
হিন্দু বিরোধী ও মুসলিম তোষণের অভিযোগ
বিজেপি নেতার এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে বারে বারে উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর আচার ও ব্যবহার, যা বিরোধীদের মতে হিন্দু বিরোধী।
তরুণ জ্যোতির এই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর মুসলিম তোষণের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ:
বর্তমান মমতা সরকার কীভাবে মুসলিমদের ভোট পাওয়ার জন্য ভুয়ো ওবিসি সার্টিফিকেট দিয়েছেন।
এই সার্টিফিকেট মামলায় জড়িয়ে সরকার জয়েন্টের মতো পরীক্ষার ফল প্রকাশে দেরি করেছে, যার ফলে যুব সমাজের ভবিতষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলেছেন, মুসলিম তোষণের ফলে দুর্গাপুজোর মণ্ডপেও আজানের সময়সূচি দেখা যাচ্ছে।
যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই এই ধরণের আক্রমণের বিরুদ্ধে সরব হয়ে নিজেকে সেক্যুলার বলেই দাবি করেছেন সর্বসমক্ষে। তরুণ জ্যোতির অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী এখনও মুখ খোলেননি। তবে বিজেপি নেতা বাংলার সাধারণ মানুষকে এই ইস্যুতে বিবেচনা করার কথা বলেছেন।