ইয়েমেনে ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে বলে শুক্রবার নিশ্চিত করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। একই সঙ্গে, এই সংবেদনশীল মামলা ঘিরে ছড়িয়ে পড়া অননুমোদিত এবং ভুয়ো তথ্য এড়িয়ে চলার জন্য সাধারণ মানুষ ও সংবাদমাধ্যমকে কড়া বার্তা দিয়েছে মন্ত্রক। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন যে, নিমিষা প্রিয়া এবং তার পরিবারকে ভারত সরকার সব ধরনের সহায়তা করছে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও ইয়েমেন সরকারের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ উপায়ে এই সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট রয়েছে।
ভারত সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টা: মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের পেছনে কূটনৈতিক তৎপরতা
সাপ্তাহিক পর্যালোচনার সময় এএনআই সংবাদ সংস্থার প্রশ্নের উত্তরে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, “এটি আদপেই একটি সংবেদনশীল বিষয়, এই মামলায় ভারত সরকার সব ধরনের সাহায্য করছে। আর ভারত সরকারের সর্বপ্রকার চেষ্টার ফলেই নিমিষা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা গিয়েছে। আমরা এই বিষয়টি আরও খুঁটিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করছি এবং সব ধরনের সহায়তা করছি।”
গত ১৬ই জুলাই নিমিষা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দিন ধার্য করা হয়েছিল, যা ভারত সরকারের তত্ত্বাবধানে স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
ভুয়ো তথ্য নিয়ে সতর্কতা: মন্ত্রকের স্পষ্টীকরণ
তবে, রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে নিমিষা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড সম্পূর্ণ বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলে যে তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, তা ভ্রান্ত ও ভুয়ো। তার কথায়, “আমরা সহৃদয় ইয়েমেন সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেছি। তবে সম্প্রতি বেশ কিছু প্রতিবেদনে যা দাবি করা হচ্ছে, তা মিথ্যে। আমাদের তরফ থেকে আপডেট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। সমস্ত রকমের ভুয়ো তথ্য থেকে দূরে থাকার অনুরোধ করছি সকলকে।”
মামলার প্রেক্ষাপট: হত্যা ও আইনি প্রক্রিয়া
কেরালার ৩৭ বছর বয়সী নার্স নিমিষা প্রিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে তার ব্যবসায়িক পার্টনার তালাল আবদু মেহেদিকে হত্যার অভিযোগ ছিল। ২০২০ সালে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে, ২০২৩ সালে ইয়েমেনের সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল এই রায় স্থগিত করে দেয়।
গত ১৭ই জুলাই রণধীর জয়সওয়াল আরও জানান যে, ইয়েমেনের শরীয়া আইনের অধীনে এই মামলা চালানোর জন্য প্রিয়ার পরিবারকে ভারত সরকারের তরফে একজন আইনজীবী বহাল করা হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে নিয়মিত কনসুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য দেশের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে। ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নিমিষা প্রিয়ার জীবন রক্ষায় কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।