স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ নামে নথিবদ্ধ সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে আদালত। হাইকোর্টের বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্কর-এর একটি বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, স্বামী বা স্ত্রীর যৌথ সম্পত্তিকে একজন ব্যক্তি কখনওই একার সম্পত্তি বলে দাবি করতে পারবেন না।
ইএমআই দিলেও মালিকানা যৌথ
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, যদি যৌথভাবে অর্জিত ও নিবন্ধিত সম্পত্তির ইএমআই (EMI)-এর সম্পূর্ণ টাকা স্বামীর পকেট থেকেই গিয়ে থাকে, তবুও স্বামী তার উপর একচেটিয়া মালিকানা দাবি করতে পারবেন না। এমনকি সম্পত্তি যদি স্বামীর টাকাতেই কেনা হয়, তাহলেও যৌথভাবে নথিবদ্ধ হওয়ার পর তিনি একক মালিকানা দাবি করতে পারবেন না।
আদালতের মতে, এই ধরনের একচেটিয়া দাবি আদতে Prohibition of Benami Property Transactions Act-এর সেকশন ৪-কে লঙ্ঘন করে।
মামলার প্রেক্ষাপট
যে মামলার ভিত্তিতে আদালত এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, সেখানে আবেদনকারী স্ত্রী দাবি করেন যে, উদ্বৃত্ত অংশের পঞ্চাশ শতাংশই তাঁর প্রাপ্য। তাঁর মতে, এটি তাঁর স্ত্রী ধনের অন্তর্ভূক্ত (a woman’s absolute and exclusive property as per Hindu Law), তাই এর উপর তাঁর সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে।
দম্পতির বিবরণ: এই দম্পতির বিয়ে হয় ১৯৯৯ সালে।
সম্পত্তি অর্জন: তাঁরা যৌথভাবে ২০০৫ সালে মুম্বইয়ে একটি বাড়ি কেনেন।
বিচ্ছেদ: ২০০৬ সাল থেকে তাঁরা আলাদাভাবে বসবাস করছেন এবং সেই বছরই স্বামী বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন, যা বর্তমানে বিচারাধীন।
যৌথ মালিকানার আইনি দিক
ভারতে সম্পত্তির যৌথ মালিকানা একটি সাধারণ অভ্যাস। তবে, এই ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি দিক হলো—যদি সম্পত্তি যৌথভাবে নথিবদ্ধ হয়, তবে একজন সহ-মালিক তা বিক্রি করতে চাইলে অন্য সহ-মালিকের অনুমতি অবশ্যই লাগবে। এই ধরনের মতবিরোধ প্রায়শই আইনি জটিলতা তৈরি করে। হাইকোর্টের এই রায় যৌথ সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে ভবিষ্যতে সৃষ্ট অনেক বিতর্কের অবসান ঘটাবে বলে মনে করা হচ্ছে।