চার বছর পর এবং ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার সন্ধ্যায় ভারতে এসে পৌঁছলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই হাই-স্টেক সফরের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৭ লোক কল্যাণ মার্গে তাঁকে একান্ত নৈশভোজে আপ্যায়ন করেন। এটি ছিল ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের আগে দুই নেতার উষ্ণ ব্যক্তিগত আলাপচারিতার সুযোগ।
৫ ডিসেম্বর হায়দ্রাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, বাণিজ্য, মহাকাশ এবং প্রযুক্তি—এই মূল ক্ষেত্রগুলিতে সম্পর্ক আরও জোরদার করার উপর নজর দেওয়া হবে। উভয় দেশই তাদের “বিশেষ এবং সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব” (Special and Privileged Strategic Partnership) এগিয়ে নিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
S-400 চুক্তিতে আত্মনির্ভর ভারতের জন্য বড় প্রস্তাব
এই শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান এজেন্ডাগুলির মধ্যে অন্যতম হল একটি নতুন S-400 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা চুক্তির আলোচনা। সূত্রের খবর, রাশিয়া এই নতুন চুক্তিতে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রযুক্তি হস্তান্তরের (Technology Transfer) প্রস্তাব দিয়েছে। এটি ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম দেশীয়ভাবে উৎপাদনের উদ্যোগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহে শুধু ক্রেতা না থেকে প্রযুক্তির অংশীদার হওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের আকাঙ্ক্ষা এই চুক্তির মাধ্যমে পূরণ হতে পারে।
ভারত যখন পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে এবং একই সাথে রাশিয়ার সঙ্গে তার কৌশলগত সম্পর্ককে ভারসাম্যপূর্ণভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে এই উচ্চ-গুরুত্বপূর্ণ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতির অভ্যর্থনা ও অন্যান্য কর্মসূচি
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আনুষ্ঠানিকভাবে পুতিনকে স্বাগত জানাবেন এবং তাঁর সম্মানে একটি রাষ্ট্রীয় ভোজসভার আয়োজন করবেন। পুতিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভারতীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে মতবিনিময় এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম আরটি (RT)-এর একটি নতুন ভারত-কেন্দ্রিক চ্যানেল চালু করা। এটি ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে গভীর মিডিয়া এবং সাংস্কৃতিক সংযোগের ইঙ্গিত দিচ্ছে।