প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী মাসে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের উচ্চ-স্তরের বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকা সফর করতে পারেন। বিশ্বজুড়ে নেতাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য এই সভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে পারেন। যদিও সরকারিভাবে এখনও কোনো ঘোষণা করা হয়নি, তবে এই সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে জোর জল্পনা চলছে।
জানা গিয়েছে, ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে, যার জন্য ২৬ সেপ্টেম্বর সকালের স্লট নির্ধারিত হয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। এই ভাষণে বিশ্ব শান্তি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিয়ে কথা বলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এই সফরে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সহ অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে পারেন।
তবে এই সফরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সম্ভাব্য বৈঠক। গত ফেব্রুয়ারিতে মোদী আমেরিকা সফরকালে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সাত মাসের মধ্যে এটি হবে দুই নেতার মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন শুল্ককে ভারত ‘অন্যায্য এবং অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে এবং স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে কৃষকদের স্বার্থের সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর সম্ভাব্য বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তির প্রধান বাধা হলো ভারতের কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উন্মুক্ত করতে অস্বীকৃতি। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে এবং রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে নিয়ে যাবে। এই কঠোর বাণিজ্যিক নীতির কারণে ট্রাম্প বহুবার মোদীকে ‘বন্ধু’ বললেও দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে চাপা উত্তেজনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর কার্যালয় বা বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এখনও এই সফর সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে এবং খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সফর ভারত ও আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নতুন দিশা দিতে পারে এবং বিশ্ব মঞ্চে ভারতের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে।