ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রাজনীতিতে কি ফের বড়সড় সমীকরণের রদবদল হতে চলেছে? নৈহাটি উৎসবের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। ব্যারাকপুরের সাংসদ তথা দলের দাপুটে নেতা পার্থ ভৌমিকের সামনে দাঁড়িয়েই সুব্রত বক্সি কার্যত কড়া বার্তা দিলেন, যা তৃণমূলের অন্দরের ‘টিকিট-রাজনীতি’ নিয়ে জল্পনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
মঞ্চ থেকে সুব্রত বক্সি সাফ বলেন, “পার্থ ভৌমিককে বলব, জীবনে যেন এই ভুল না করেন। সাংসদ পদ ছেড়ে তিনি যেন আবারও বিধায়ক না হওয়ার চেষ্টা করেন।” দলের রাজ্য সভাপতির এই প্রকাশ্য মন্তব্য ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, দলের নির্দশেই তিনবারের বিধায়ক ও সেচমন্ত্রীর পদ ছেড়ে অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে লোকসভা লড়েছিলেন পার্থ এবং জয়ীও হন। কিন্তু বছর ঘুরলেই ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন। শোনা যাচ্ছে, ব্যারাকপুরের রাজনীতির অন্দরে পার্থকে ফের নৈহাটি থেকে বিধায়ক পদে দেখার জন্য তাঁর অনুগামীরা ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছেন। সুব্রত বক্সির বার্তা সেই পরিকল্পনায় কার্যত জল ঢেলে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
তৃণমূলের অন্দরে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, পার্থ ভৌমিক যদি বিধায়ক পদে ফিরে আসেন, তবে তাঁর জায়গায় ব্যারাকপুর লোকসভায় তাঁরই কোনও ঘনিষ্ঠ বিধায়ককে প্রার্থী করার ভাবনা রয়েছে। এই সমীকরণে দলেরই অন্য একটি অংশ তীব্র ক্ষুব্ধ। সুব্রত বক্সি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত আস্থাভাজন। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নেত্রীর নির্দেশ ছাড়া এমন মন্তব্য তিনি করতেন না। বক্সি আরও যোগ করেন, “আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই নতুন দিগন্ত শুরু হবে, তাতে অংশগ্রহণ করবেন পার্থ। তাই অনুরোধ করব, তিনি যেন সাংসদ হিসেবেই থাকেন।” রাজ্য সভাপতির এই নির্দেশের পর খোদ পার্থ ভৌমিক বা ব্যারাকপুরের অন্য কোনও নেতা মুখ খুলতে চাননি। সকলেই আপাতত ‘স্পিকটি নট’।