আধার কার্ড নিয়ে কঠোরতা, ‘আধার স্ব-ঘোষিত, নির্ভরযোগ্য নয়’—সরকারি নথিতে জন্ম প্রমাণ করতে কেন লাগবে মিউনিসিপাল সার্টিফিকেট?

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা রাজ্যের লক্ষ লক্ষ নাগরিকের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করবে। যোগী সরকারের নির্দেশ অনুসারে, এখন থেকে আধার কার্ড কোনো অফিসিয়াল কাজে জন্মতারিখের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না।

কোন কোন ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে?

এই নতুন নিয়মের ফলে সরকারি ও বেসরকারি স্তরে জন্ম সংক্রান্ত প্রমাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আধার অকার্যকর হবে। নাগরিকদের এখন জন্ম সনদ, স্কুল ছাড়পত্র বা পৌরসভার সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। এই বিধিনিষেধগুলি নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে প্রযোজ্য হবে:

চাকরির আবেদন এবং পদোন্নতি

পেনশন এবং সরকারি সুবিধা

স্কুল-কলেজে ভর্তি

ভোটার আইডি তৈরি এবং সংশোধন

📌 আধার কেন জন্ম প্রমাণ নয়?
এই কঠোরতার পিছনে রয়েছে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI)-এর স্পষ্ট নির্দেশনা। পরিকল্পনা বিভাগের স্পেশাল সেক্রেটারি অমিত সিংহ বাঁশালের স্বাক্ষরে জারি করা চিঠিতে বলা হয়েছে:

স্ব-ঘোষিত তারিখ: আধার কার্ডে উল্লিখিত জন্মতারিখ প্রায়শই স্ব-ঘোষিত (‘সেলফ-ডিক্লেয়ার্ড’) হয়, বিশেষ করে গ্রামীণ এবং বয়স্ক নাগরিকদের ক্ষেত্রে।

অফিসিয়াল ব্যাকিং নেই: UIDAI-এর মতে, আধার একটি ডিজিটাল পরিচয়, জন্ম সনদ বা নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, কারণ আধার কার্ডে জন্ম-সংক্রান্ত কোনো অফিসিয়াল ডকুমেন্ট যুক্ত থাকে না।

পুনঃ যাচাইয়ের নির্দেশ: সমস্ত সরকারি দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যারা শুধু আধারের ভিত্তিতে কোনো সার্টিফিকেট জারি করেছে, সেগুলোর পুনরায় যাচাই করতে হবে।

📌 প্রভাব এবং সরকারি লক্ষ্য
সরকারের দাবি, এই সিদ্ধান্তে জালিয়াতি কমবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করতে সাহায্য করবে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গত সপ্তাহে সকল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে, এই নিয়মের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ সমস্যায় পড়বেন, কারণ গ্রামীণ ও দরিদ্র পরিবারের অনেকের কাছে পুরনো বা হারিয়ে যাওয়া নথিপত্র পুনরায় সংগ্রহ করা সময়সাপেক্ষ ও খরচসাপেক্ষ হবে। এই সিদ্ধান্ত উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রেও চালু হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy