অসমের পশ্চিম কার্বি আংলং জেলায় গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে চলা ভয়াবহ অশান্তি ও গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষ পর্যন্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় জেলার একাধিক এলাকা। পরিস্থিতি ক্রমশ প্রশাসনের হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার দ্রুত সেনা নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত দু’দিন ধরে পশ্চিম কার্বি আংলংয়ের বেশ কিছু সংবেদনশীল এলাকায় উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। উন্মত্ত জনতা দোকানপাটে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং সরকারি সম্পত্তিতে ভাঙচুর চালায়। এর ফলে স্বাভাবিক জনজীবন সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে পড়ে এবং স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রথমে রাজ্য পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনী চেষ্টা করলেও উত্তেজনা প্রশমিত না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেনার সাহায্য চাওয়া হয়।
অসম পুলিশের মহাপরিচালক (DGP) হরমিৎ সিং জানিয়েছেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি প্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেনা ও পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে।” তিনি আরও সতর্ক করে দিয়েছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো ধরনের গুজব বা উস্কানিমূলক ভুয়ো খবর ছড়ানো হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে রাতভর সেনার টহলদারি চলছে এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, যারা এই হিংসার পেছনে দায়ী, তাদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রী দপ্তর সরাসরি এই পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। যদিও সেনার উপস্থিতিতে কার্বি আংলং এখন কিছুটা শান্ত, তবুও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে জনমনে। স্থায়ী শান্তি ফেরাতে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।