বেতনের বকেয়া টাকা ফেরত নিয়ে আর্থিক সমস্যার মুখে থাকা পাঁচজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীকে অবশেষে বড় স্বস্তি দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। ওড়িশার কটক জেলার ওই সরকারি কর্মীদের প্রায় ছয় বছর আগে পাওয়া অর্থ, অবসর নেওয়ার তিন বছর পর ফেরত দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানাল—এই টাকা তাঁদের ফেরত দিতে হবে না।
সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ
আদালত এই রায়ের কারণ হিসেবে স্পষ্ট করে জানিয়েছে:
১. প্রতারণা হয়নি: কর্মীরা নিজেরা কোনও ভুয়ো তথ্য দেননি বা প্রতারণা করেননি।
২. সরকারি ভুলের মাশুল: সরকারি ব্যাখ্যার ভুলের কারণেই তাঁদের অতিরিক্ত অর্থ মজুরি হিসেবে দেওয়া হয়েছিল।
৩. মানবিক দিক: অবসরের পর স্বল্পবেতনভোগী কর্মীদের কাছ থেকে এভাবে টাকা ফেরত দাবি করা অন্যায় এবং মানবিক দিক থেকেও গ্রহণযোগ্য নয়।
আদালত আরও মন্তব্য করে যে, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বেতন ভাতা ফেরত চাওয়া বেআইনি এবং অন্যায্য। এমনকি ওড়িশা হাইকোর্ট এই বিষয়টি সঠিকভাবে খতিয়ে দেখেনি বলেও মন্তব্য করে শীর্ষ আদালত।
কী ঘটেছিল এই মামলায়?
ঘটনাটি ওড়িশার কটক জেলা আদালতের সঙ্গে যুক্ত। ওই পাঁচজন কর্মী স্টেনোগ্রাফার ও পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিযুক্ত ছিলেন।
সুবিধা লাভ: ২০১৭ সালে শেট্টি কমিশনের সুপারিশের ভুলের ভিত্তিতে তাঁদের পূর্বতন পদোন্নতি দিয়ে ২৬ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়।
সমস্যা: ২০২০ সালে তাঁরা অবসর নেন। কিন্তু অবসরের তিন বছর পর এবং সুবিধা মেলার ছয় বছর পর, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে কটক জেলা আদালত নির্দেশ দেয়—এই অর্থ ফেরত দিতে হবে।
আইনি লড়াই: জেলা আদালতের আদেশে আপত্তি জানিয়ে তাঁরা হাইকোর্টে গেলেও, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ওড়িশা হাইকোর্ট তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর প্রাক্তন কর্মীরা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে ভুল সরকারি ব্যাখ্যার কারণে আর্থিক সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও, অবসরের বহু বছর পর আর্থিক চাপের মুখে পড়ার আশঙ্কা থেকে রেহাই পেলেন ওই পাঁচজন প্রাক্তন কর্মী।