গত মরসুমে গোল করার লোকের অভাবে ভুগতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। সেই ভুল শুধরে এবার শক্তিশালী দল গড়ার লক্ষ্যে নেমেছে অস্কার ব্রুজোর কোচিংয়ে থাকা লাল-হলুদ ব্রিগেড। আর সেই কারণেই পুরনো সৈনিক এডমুন্ড লালরিনডিকাকে তিন বছরের চুক্তিতে সই করিয়ে দলে ফেরাল তারা। ২৬ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার গত মরসুমে ইন্টার কাশীর হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন।
কেন এডমুন্ডকে ফেরালো ইস্টবেঙ্গল?
ইস্টবেঙ্গলের গত মরসুমের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ ছিল গোলের অভাব। এই শূন্যস্থান পূরণের জন্যই এডমুন্ডকে দলে আনা হয়েছে। গত মরসুমে ইন্টার কাশীর হয়ে সব মিলিয়ে ২৪টি গোল করেছেন এই স্ট্রাইকার। এর মধ্যে সুপার কাপে তাঁর ৪টি গোল এবং ৬টি অ্যাসিস্ট ছিল উল্লেখযোগ্য। ইন্টার কাশী আই লিগে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করলেও, ইস্টবেঙ্গলের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে খেলার সুযোগ হাতছাড়া করেননি এডমুন্ড।
এডমুন্ডের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও জাতীয় দলে অভিষেক
এডমুন্ড লালরিনডিকা এর আগেও ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে খেলেছেন। ২০১৯-২০ মরসুমে তিনি বেঙ্গালুরু এফসি থেকে লোনে লাল-হলুদে যোগ দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি দুটি ম্যাচে খেলেছিলেন, যার মধ্যে একটি ডার্বিতে তাঁর অ্যাসিস্ট ছিল। এআইএফএফ এলিট অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা এডমুন্ড ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বেঙ্গালুরু এফসি-তে খেলেছেন। ২০২৩ সালে ধারে ইন্টার কাশীতে যোগদানের আগে, এই তরুণ ফরোয়ার্ড অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব-১৯ এবং সিনিয়র স্তরেও ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০২৪ সালের ৬ জুন কলকাতার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কুয়েতের বিপক্ষে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে তার সিনিয়র জাতীয় দলে অভিষেক হয়।
কোচ ও এডমুন্ডের প্রতিক্রিয়া
ইমামি ইস্টবেঙ্গল এফসির হেড কোচ অস্কার ব্রুজো এডমুন্ডকে দলে পেয়ে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, “এডমুন্ড ইন্টার কাশিতে অসাধারণ এক মরসুম কাটিয়েছে। এমনকি জাতীয় দলে ডাকও পেয়েছে। আমরা তার পারফরম্যান্স খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করছি। এমন একজন খেলোয়াড়কে পেয়েছি যে বিভিন্ন আক্রমণাত্মক পরিস্থিতিতে সত্যিই পার্থক্য আনতে পারে।”
ইস্টবেঙ্গলে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে উচ্ছ্বসিত এডমুন্ড নিজেও। তিনি বলেন, “আমি সবসময় ইস্টবেঙ্গলে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখে এসেছি। অভিষেকের সময় আমি চোট পেয়েছিলাম। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না কারণ ঘটনাটা যুবভারতীতে একটি ডার্বির সময় ঘটেছিল। এখন আমি ফিরে এসেছি, আমার বিশ্বাস এখানে আমার সত্যিই কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার আছে। আমি আমার সর্বস্ব দিতে চাই, এই দুর্দান্ত ক্লাবের জন্য গোল করতে, ডার্বি এবং টুর্নামেন্ট জিততে চাই। পাঁচ বছর আগে ইস্টবেঙ্গলের ভক্তদের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। এখন আমি তাদের সেই ভালোবাসার মূল্য ফেরাতে চাই।”
এডমুন্ডের এই প্রত্যাবর্তন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। আগামী মরসুমে তার পারফরম্যান্স কেমন হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।