SIR শুনানি শিবিরে উত্তেজনা, কমিশনের গাইডলাইন না কি রাজনৈতিক সংঘাত? জেলাশাসকের কড়া বার্তার মাঝেই ধুন্ধুমার

শনিবার থেকে শুরু হওয়া এসআইআর (SIR) শুনানিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল আসানসোলের মণিমালা বালিকা বিদ্যালয় চত্বর। শুনানির প্রথম দিনেই চেলিডাঙা এলাকায় বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় স্কুল চত্বর। বিজেপি কর্মীদের মারধর এবং তাদের ‘সহায়তা ক্যাম্প’ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে, যদিও শাসক দল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, যাদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি বা তথ্যে অসংগতি রয়েছে, তাদের শুনানির জন্য ডাকা হচ্ছে। এই উপলক্ষে চেলিডাঙার ওই স্কুলে একটি শিবির করা হয়েছিল। বিজেপির দাবি, ভোটারদের সাহায্য করার জন্য তারা স্কুলের বাইরে একটি ক্যাম্প করেছিল। অভিযোগ, হঠাৎই তৃণমূল আশ্রিত একদল দুষ্কৃতী এসে তাঁদের ক্যাম্পে হামলা চালায়, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে এবং কর্মীদের মারধর করে। এক বিজেপি কর্মী রক্তাক্ত অবস্থায় অভিযোগ করেন, “আমরা মানুষকে সাহায্য করছিলাম, তখনই তৃণমূলের লোকেরা এসে অতর্কিত আক্রমণ চালায়।”

ঘটনার খবর পেয়ে দু’পক্ষের বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক স্কুলের সামনে জড়ো হন। শুরু হয় স্লোগান-পাল্টা স্লোগান। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে দু’পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিজেপির রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় সরাসরি জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “পুলিশের সামনেই আমাদের মারধর করা হয়েছে। এই পরিবেশে স্বচ্ছ শুনানি সম্ভব নয়।”

অন্যদিকে, অভিযোগ খারিজ করে আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ঘটক পাল্টা দাবি করেন, “বিজেপি নিয়ম ভেঙে দলীয় পতাকা নিয়ে ক্যাম্প করেছিল। সাধারণ মানুষই তার প্রতিবাদ করেছে। ওরা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ভোটারদের আটকাতে চাইছে।”

পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নামেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নামবলম। তিনি স্পষ্ট জানান, “নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইনে শুনানি শিবিরের বাইরে কোনও সহায়তা ক্যাম্প করার অনুমতি নেই। দলীয় পতাকা নিয়েও ভেতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। সাময়িক উত্তেজনার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এখন শুধুমাত্র নোটিশ দেখিয়েই নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।”

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy