SIR: ৭৮২ ভোটারের মধ্যে একজনও মৃত নেই! কমিশনের সন্দেহ হতেই ফাঁস হলো ভয়ঙ্কর ‘কেউটে’!

কোচবিহারের দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের ১১০ নম্বর বুথে ভোটার তালিকায় বড়সড় গরমিলের ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল শুরু হয়েছে। প্রথমে বুথের বিএলও রিপোর্ট দেন, ৭৮২ জন ভোটারের মধ্যে একজনও মৃত, স্থানান্তরিত বা নিখোঁজ হননি। কমিশনের সন্দেহ হতেই যাচাই শুরু হয়, আর তাতেই ধরা পড়ে ১৪ জন মৃত এবং ২৫ জন স্থানান্তরিত ভোটারের নাম! এই বুথের বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ হওয়ায় বিষয়টি আরও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

দিনহাটার সাবেক ছিট মহল এলাকার বামনহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১০ নম্বর বুথে ৭৮২ জন ভোটার ছিলেন। বিএলও, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী মামনি সিং, সব এনিউমারেশন ফর্ম ডিজিটাইজ়ড করে দেওয়ার পরেও রিপোর্টে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সন্দেহ হয় এবং জেলা নির্বাচন আধিকারিককে যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। যাচাইয়ের পরই জানা যায়, ১৪ জন মৃত এবং ২৫ জন অন্যত্র চলে যাওয়া ভোটারের নাম ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়নি।

বিএলও এবং বিডিও-র চাপান-উতোর

এই ঘটনায় ১১০ নম্বর বুথের বিএলও মামনি সিং চাপে পড়েছেন। তিনি অবশ্য সব দায় চাপিয়েছেন বিডিও অফিসের ওপর। তাঁর দাবি, নিয়ম মেনেই তিনি মৃত এবং শিফটিং ভোটারদের নাম ফর্ম পূরণ করে সই করিয়ে বিডিও অফিসে জমা দিয়েছিলেন এবং অ্যাপে আপলোডও করেছিলেন। তিনি বলেন, “জমা দেওয়া এনিউমারেশন ফর্মে মৃত এবং শিফটিং ভোটারও ছিল। বাড়ির লোকেরা সই করে জানিয়ে দিয়েছিলেন। তাই বুঝতে পারছি না, আমি কী করে দায়ী হলাম।”

সীমান্তের জটিলতা এবং রাজ্যের চিত্র

ছিট মহল এলাকা হওয়ায় কিছু জটিলতা রয়েছে। ২০১৫ সালে ভারতীয় নাগরিক হওয়া সেখানকার বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকা বাধ্যতামূলক নয়। এলাকার বাসিন্দারাও বলছেন, তাঁদের মৃত আত্মীয়দের নাম ভোটার তালিকায় থাকলে তাঁরা কী করবেন?

কোচবিহার ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার বাদুরিয়ায় এক বাংলাদেশী নাগরিকের ভারতে ভোটার তালিকায় নাম থাকার ঘটনাও সামনে এসেছে। নির্বাচন কমিশন এই ধরনের গরমিলকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। কমিশনের প্রাথমিক ধারণা, শুধুমাত্র বিএলও নন, এর সঙ্গে ইআরও অফিসের যোগসূত্র থাকতে পারে।

সিইও (CEO) অফিস সূত্রে খবর, প্রথমে রাজ্যের ২২০৮টি বুথে এমন ত্রুটি দেখা গিয়েছিল। কমিশনের কড়াকড়িতে বুধবার সেই সংখ্যা কমে ২৯টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৭৬০টি বুথ থেকে সংখ্যাটি কমে ২০ হয়েছে। মালদা (৪), পুরুলিয়া (২), জলপাইগুড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়ায় (১টি করে) এখনও কিছু বুথ রয়েছে, যেখানে মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারের তথ্য পাওয়া যায়নি। সেগুলির যাচাই চলছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy