ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন (SIR) ইস্যুতে এবার সরাসরি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের (ECI) দ্বারস্থ হল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। শুক্রবার দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার-এর দফতরে অভিষেকের তৈরি করা ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল পৌঁছে যায়। যদিও কমিশন এবং তৃণমূল—উভয় শিবিরের বক্তব্যেই তীব্র সংঘাতের সুর স্পষ্ট।
TMC-এর বিস্ফোরক অভিযোগ
তৃণমূল সাংসদদের দাবি, SIR-এর কারণে গত ৩২ দিনে সাধারণ মানুষ ও বিএলও (BLO) মিলিয়ে অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার তালিকা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
-
ডেরেক ও’ব্রায়েনের দাবি: রাজ্যসভা তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “আমরা তাঁকে (জ্ঞানেশ কুমার) জানিয়েছি, তাঁর এবং জাতীয় নির্বাচন কমিশনের হাতে রক্ত লেগে রয়েছে। আমরা SIR-এর ধারণার বিরোধী নই, আমরা অপরিকল্পিত, হৃদয়হীন পদ্ধতিতে এটি করা হচ্ছে তার বিরোধী।”
-
উত্তর মেলেনি: তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় জানান, তাঁরা পাঁচটি প্রশ্ন করলেও কোনোটিরই সম্পূর্ণ উত্তর কমিশন দেয়নি।
কমিশনের কড়া বার্তা
সূত্রের খবর, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে পাল্টা কড়া বার্তা দিয়েছেন:
-
হস্তক্ষেপ নয়: “বিএলও-দের কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিন।”
-
চাপ সৃষ্টি নয়: “বিএলও-দের ওপর যেন কোনও চাপ সৃষ্টি না করা হয়। কোনো রাজনৈতিক দল হুমকি দিতে পারে না।”
-
সহযোগিতার আহ্বান: কমিশন জানায়, SIR-এর মাধ্যমে মৃত ভোটার, অনুপ্রবেশকারী এবং একাধিক স্থানে নাম থাকা ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হবে। খসড়া তালিকা আগামী ৯ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হবে, এরপর সমস্যা সমাধানের জন্য ২ মাস সময় থাকবে। তাই এই কাজে কমিশনের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
বিজেপির পাল্টা কটাক্ষ
তৃণমূলের এই অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার কটাক্ষ করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যাঁরা গেছে তাঁরা SIR-এর ফর্মটা ফিলআপ করেছে কি করেনি? তাঁর বাড়ির স্ত্রী, বাড়ির ছেলেমেয়ে এনারা কি SIR-এর ফর্ম ফিলআপ করেছেন? না এখনো ফাঁকা রেখে দিয়েছেন? নিজেরা ফর্ম ফিল আপ না করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন।”