বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন রায় ওরফে অনন্ত মহারাজের বিতর্কিত মন্তব্যে ফের সরগরম বাংলার রাজনীতি। এবার সরাসরি দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে ‘পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি’ বলে আক্রমণ শানালেন তিনি। শনিবার দিনহাটার সিতাই এলাকায় নিজের সমর্থকদের নিয়ে এক বনভোজনের আসরে বক্তব্য রাখার সময় এসআইআর (SIR) ইস্যুতে এই বিস্ফোরক দাবি করেন গ্রেটার সুপ্রিমো।
সম্প্রতি এসআইআর-এর পক্ষে জোরালো সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল অনন্ত মহারাজকে। নিজের বাড়িতে মুসলিম ধর্মগুরুদের সঙ্গে আলোচনাতেও তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন যে, এর ফলে ভারতীয় মুসলিমদের কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানেই তাঁর এই ভোলবদল নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। সিতাইয়ের সভায় তিনি বলেন, “যাদের হাতে খাতা-কলম, ওরাই তো বাংলাদেশি, ওরাই তো পাকিস্তানি। ওরাই তো পাকিস্তান থেকে এসেছে। ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি পাকিস্তানি-বাংলাদেশি। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশি-পাকিস্তানি। রাজ্যপাল পাকিস্তানি-বাংলাদেশি। তাহলে আমার প্রমাণপত্রটা কে দেখবে?”
অনন্ত মহারাজের যুক্তি, যারা বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক চেয়ারে বসে নাগরিকদের পরিচয়পত্র দাবি করছেন, তাঁরাই আসলে অনুপ্রবেশকারী। তাঁর এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। বিশেষ করে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গের প্রভাবশালী এই নেতার ‘বেসুরো’ মন্তব্য বিজেপি নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
তবে এই বিতর্ক নিয়ে এখনই কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া দেয়নি বিজেপি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য কেবল জানিয়েছেন যে, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে একে ‘দেশের সংবিধানের অবমাননা’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এর আগেও একাধিকবার রাজবংশীদের প্রতিশ্রুতি পূরণ না করার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন অনন্ত মহারাজ। এবার সরাসরি দেশের প্রশাসনিক প্রধানদের আক্রমণ করে তিনি আদতে কী বার্তা দিতে চাইছেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ।